23109

03/14/2025 গুলির শব্দে থমথমে ঘুমধুম সীমান্ত, নির্ঘুম রাত কাটছে আতঙ্কে

গুলির শব্দে থমথমে ঘুমধুম সীমান্ত, নির্ঘুম রাত কাটছে আতঙ্কে

বান্দরবান প্রতিনিধি

৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:১১

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সামরিক জান্তা বাহিনীর সঙ্গে স্বাধীনতাকামী সংগঠন আরকান আর্মির (এএ) মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে। রাতভর চলমান সংঘর্ষে সীমান্তবর্তী ক্যাম্প দখলকে কেন্দ্র করে উভয়ের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) ভোর রাত থেকে লাগাতার গোলাগুলি, মার্টারশেল নিক্ষেপ ও রকেট লান্সার বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেপে ওঠে সীমান্তবর্তী নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম-তুমব্রুর বিস্তীর্ণ এলাকা। এর আগে শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে থেকে থেমে থেমে গোলাগুলি হয়।

গোলাগুলির সময় রকেট লান্সার উড়ে এসে পড়েছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঘুমধুম-তুমব্রু এলাকায় বসতঘরের উপরও। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা না হলেও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। অনেকেই আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠায় নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে। ভয়ে ছেলে-মেয়েদের স্কুলেও পাঠাতে পারছে না অভিভাবকরা। কৃষকরা কৃষি ক্ষেতে যেতে ও দৈনন্দিন কাজ করতেও ভয় পাচ্ছে।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ঘুমধুম এলাকার স্থানীয় সাংবাদিক মাহমুদুল হাসান বলেন, বাংলাদেশের ঘুমধুম -মায়ানমার সীমান্ত অংশে বিদ্রোহী গ্রুপ ও বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) মধ্যকার চলমান যুদ্ধ সারারাত চলমান আছে। গোলাগুলির বিকট শব্দে সীমান্ত এলাকার শূন্যরেখায় বসবাসকারীরা ভয়-আতঙ্কে নির্ঘুম রাত পর করেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঘুমধুম এলাকার এক স্থানীয় জানান, সারারাত গোলাগুলির পর ভোর রাতে একটি বিকট শব্দ শুনতে পেয়ে সবার মনে আতঙ্ক আরও বেড়ে যায়। সকালে কোনাপাড়া এলাকায় একটি মর্টার শেলের অংশ পাওয়া গেছে।

বিদ্রোহীদের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে পেরে উঠতে না পেরে মায়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের প্রায় ১৪-১৫ জন প্রাণে বাঁচাতে বাংলাদেশে সীমান্তে প্রবেশের সুযোগ খুঁজছে। তাদের ঝোঁপে লুলিয়ে থাকতে দেখা গেছে বলেও জানান তিনি।

ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আনোয়ার জানান, তার গ্রামের নয়া পাড়ার সীমান্তের ওপারে ডেঁকি বুনিয়া ৩৩ নম্বর পিলার ভোর ৩টা থেকে প্রচন্ড গোলাগুলির আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায়। এলাকার পরিস্থিতি থমথমে বিরাজ করছে। লোকজনের চলাচল সীমিত হয়েছে বলে জানান তিনি।

ঘুমধুম পুলিশ ফাঁড়ি তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক (আইসি) মাহাফুজ ইমতিয়াজ ভুঁইয়া জানান, গতকাল রাতভর গোলাগুলি চলছে ওপারে। গোলাগুলির শব্দে অনেকের মনে ভয়-আতঙ্ক তো হবেই। তবে যেকোনো পরিস্তিতিতে স্থানীয়দের নিরাপত্তা দিতে আমরা সদা জাগ্রত ও প্রস্তুত আছি।

গুমধুম ইউনিয়ন এলাকার শিক্ষক ও অভিভাবকের বরাতে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ত্রিরতন চাকমা জানান, সীমান্তের ওপারে রাতব্যাপী গোলাগুলির আতঙ্কে এলাকার লোকজন কেউ বাইরে যেতে পারছেন না। সেই পরিস্থিতিতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরকে নিরাপদে অবস্থানে থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, সীমান্তের ওপারে রাতভর প্রচণ্ড গোলাগুলির কারণে গুমধুম এলাকার জনসাধারণের চলাচল সীমিত করা হয়েছে, সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]