25105

09/17/2024 তাপপ্রবাহে নাকাল শ্রমজীবী মানুষ, গরমে-ঘামে চরম অস্বস্তি

তাপপ্রবাহে নাকাল শ্রমজীবী মানুষ, গরমে-ঘামে চরম অস্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬ মে ২০২৪ ১২:১৬

আবারও শুরু হয়েছে তাপপ্রবাহ। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের পাঁচটি বিভাগে ৪৮ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তাপমাত্রা বাড়ায় আজ সকাল থেকেই অত্যধিক গরম অনুভব করছেন রাজধানীর মানুষজন। তীব্র গরম আর ঘামে নাস্তানাবুদ অবস্থা সবার। বেশি বিপাকে পড়েছেন সাধারণ শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সরেজমিনে রাজধানীর ধানমন্ডি, নিউমার্কেট ও নীলক্ষেতসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বেলা বাড়লেও সড়কে মানুষজনের উপস্থিতি খুব একটা নেই। জরুরি প্রয়োজন কিংবা কাজ ছাড়া বাইরে অবস্থান করছেন এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। যারা বাইরে এসেছেন দ্রুততম সময়ে কাজ শেষ করে গন্তব্যের দিকে ফিরছেন।

প্রচণ্ড গরমে বেশি খারাপ অবস্থায় আছেন রিকশা-ভ্যান চালক, মুটে-মজুর, ভাসমান দোকানি, হকার, ডেলিভারি রাইডার এবং সড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ ও আনসার সদস্যরা। জীবন-জীবিকার তাগিদে রোদ-গরম উপেক্ষা করেই কাজ করতে দেখা গেছে তাদের। প্রায় সবার অবস্থাই ছিল ঘর্মাক্ত। আবার অনেক রিকশাচালকদের ক্লান্ত হয়ে বিভিন্ন বড় গাছ কিংবা ছায়াযুক্ত স্থানে রিকশা থামিয়ে বিশ্রাম নিতেও দেখা গেছে।

সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে যাত্রীর অপেক্ষায় থাকা রিকশাচালক আব্বাস উদ্দিন বলেন, গত কয়েক দিন পরিবেশটা স্বাভাবিক ছিল। গরম লাগলেও তেমন একটা ক্লান্তি লাগেনি। কিন্তু গতকাল থেকে আবার অনেক গরম লাগছে। একটু রিকশা চালালেই ঘেমে যেতে হচ্ছে। বেশিক্ষণ কাজ করা যাচ্ছে না। অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে যেতে হয়। আর পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে বাইরে আসতে হয়। ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই। রিকশা না চালালে দৈনিক খাবার খরচও হবে না। তবে খুব কষ্ট হচ্ছে।

রইস উদ্দিন নামের আরেক রিকশাচালক বলেন, একটানা বেশি সময় কাজ করা যায় না। গরমে বেশি ঘামলে আবার পরে ঠান্ডা-জ্বর লেগে যাচ্ছে। আমার সাথের অনেকেই অসুস্থ। কয়েকটা খেপ মারার পরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে হচ্ছে। পানি খাচ্ছি। শুরুর দিকে পানির জন্য অনেক সমস্যা হয়েছে। কিন্তু এখন রাস্তার অধিকাংশ মোড়ে-মোড়ে পানি পাওয়া যাচ্ছে। এটা আমাদের জন্য খুব ভালো হয়েছে।

নিউমার্কেটে শাহীন আলম নামের এক কুলি বলেন, বিভিন্ন গোডাউন থেকে দোকানে কাপড় ও অন্যান্য মালসামানা পৌঁছে দেওয়া আমাদের কাজ। গোডাউনে যে গরম... এতে অসুস্থ হয়ে যেতে হচ্ছে। ঘামে অবস্থা এমন হয় যেন গোসল করে উঠেছি। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের মতো গরিবদের কাজ করে খাওয়ার রাস্তাও বন্ধ হয়ে যাবে।

এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, গত কয়েক দিন কম-বেশি বৃষ্টি ও বৈশাখি ঝড়ের কারণে রাজধানীসহ সারা দেশেই তাপমাত্রা কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে ছিল। তবে, বৈশাখের মাসের শেষ আর জ্যৈষ্ঠ মাসের শুরুতেই আবার সারা দেশে চাঙা হয়েছে তাপপ্রবাহ। এর প্রভাবে সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা বাড়ছে। এ সময়জুড়ে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিও বেড়েছে।

এর আগে, গতকাল বুধবার (১৫ মে) রাতে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। অবশ্য গত এপ্রিলেও বেশ কয়েকবার তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছিল।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]