25920

09/19/2024 সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের পর আমের দাম দ্বিগুণ

সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের পর আমের দাম দ্বিগুণ

জেলা সংবাদদাতা, খুলনা

২ জুন ২০২৪ ১৯:১৬

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাতক্ষীরার আম চাষিরা। হিম সাগর, ন্যাড়া ও আম্রপালি আম ভাঙা এখনও শেষ হয়নি। ঝড়ের কারণে এসব আম পড়ে গেছে। এতে প্রায় দুই কোটি টাকার আম নষ্ট হয়েছে বলে দাবি করেছেন চাষিরা। ঝরে পড়া এসব আমের কোনো ক্রেতা পাচ্ছেন না আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা।

এদিকে সাতক্ষীরার সুলতানপুর আমের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঝড়ের পর সাতক্ষীরায় আমের দাম দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সাতক্ষীরার হিম সাগরের চাহিদা বেশি হওয়ায় প্রচুর দাম পাচ্ছে কৃষকরা।

সাতক্ষীরার আমচাষি মিজানুর রহমান বলেন, আমার পাঁচ বিঘা জমির ওপর আম বাগান। ৫০টি আম গাছ লাগানো। এবার ২৫টি গাছে কিছু আম হয়েছিল। বাকিগুলোতে তেমন আম হয়নি। তবে ঝড়ে অনেক আম ঝরে পড়েছে। পুঁজি হারিয়ে ফেলেছি এবার। এমনিতেই এবার ফলন কম তাতে আবার ঝড়। কি করবো বুঝতে পারছি না।

সাতক্ষীরার সুলতানপুর বড় বাজারের আম ব্যবসায়ী মো. ইদ্রিস আলী বলেন, ঝড়ের আগে আমাদের আমের দাম অনেক কম ছিল। ঝড়ে আম কমে যাওয়ার কারণে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আম নষ্ট হয়ে গেছে। ঝড়ের আগে আমের দাম ছিল ২২০০ থেকে ২৩০০ টাকা মণ। ঝড়ের পরে ৩২০০ থেকে ৩৪০০ টাকার নিচে কোনো আম নেই। আম এক প্রকার নেই বললেই চলে।

আমচাষি রবিউল ইসলাম বলেন, সাতক্ষীরার হিমসাগর আম ঝড়ের আগ মুহূর্তে দাম ছিল ২৪০০, ২৬০০, ২৮০০ ও ৩০০০ হাজার টাকা। কিন্তু ঝড় পরবর্তী সময়ে আমের দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। অর্থাৎ ৩২০০ থেকে ৪৫০০ টাকা আম বিক্রি হচ্ছে। আজকের সর্বোচ্চ আম বিক্রি হয়েছে ৪৫০০ টাকা মণ। সাতক্ষীরার হিমসাগর আম এবার উৎপাদন কম হওয়ার কারণে এবং কাস্টমারের চাহিদা বেশি হওয়ার কারণে প্রচুর দাম পাচ্ছে কৃষকরা।

সাতক্ষীরার আম অন্যান্য জেলার চেয়ে ১৫ থেকে ২০ দিন আগে বাজারে ওঠে। পুরো বাংলাদেশজুড়ে সাতক্ষীরার হিমসাগর আমের প্রতি নজর থাকে। সাতক্ষীরার আম সুমিষ্ট হওয়ার কারণে ডিমান্ড থাকে। এ কারণে দামটাও বেশি। তবে আমের দাম কোনো বিষয় না, ভালো আম হলে সর্বোচ্চ দাম কৃষকরা পাচ্ছে। ঝড়ের ফলে বাগান চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড়ে প্রচুর আম পড়েছে। ফলে আম কমে গেছে। তবে চাহিদা অনেক বেশি। ঘূর্ণিঝড় একটা কারণ হিমসাগর আমের দাম বৃদ্ধি হওয়ার।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, সাতক্ষীরা জেলায় এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার টন। তবে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে আম পড়ে জেলায় ৩২২ টন আমের ক্ষতি হয়েছে। এ বছর সব মিলিয়ে ৪ হাজার ১১৮ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। জেলায় সরকারি তালিকাভুক্ত ৫ হাজার ২৯৯টি আমবাগান ও ১৩ হাজার ১০০ জন আম চাষি রয়েছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সাতক্ষীরার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে অনেক আম পড়ে গেছে। এক্ষেত্রে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলায় ৩২২ টন আমের ক্ষতি হয়েছে। যার বাজার মূল্য দুই কোটি টাকা।

সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে আমাদের ফসলের বেশ কিছু ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে আম। আমের মধ্যে হিমসাগর ন্যাংড়া এই আমগুলো এখন বিক্রির টাইম। প্রায় ১০০ হেক্টরের মতো আম ঝড়ে ঝরে পড়েছে। আমাদের পাট সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমের ক্ষতির পরিমাণটা আমরা ডি ফর্ম আকারে ইনভিউজাল নির্ধারণ করছি সেটা সম্পূর্ণ হলে মোট কত টাকার আম ক্ষতি হয়েছে সেটি জানাতে পারবো।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]