26442

09/17/2024 গোপালগঞ্জের ‘কথা বলা’ সেই আলোচিত গাছ কেটে ফেলল স্থানীয়রা

গোপালগঞ্জের ‘কথা বলা’ সেই আলোচিত গাছ কেটে ফেলল স্থানীয়রা

গোপালগঞ্জ থেকে

২২ জুন ২০২৪ ১৯:৫১

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে গাছে কান পাতলে নারী কণ্ঠে কথা শোনা যায় এমন কথা ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষ ও উৎসুক জনতা সেখানে গিয়ে ভিড় করেন। গাছের কথা শুনতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন। পরে বিষয়টিকে গুজব ও ভুয়া দাবি করে আলোচিত সেই গাছটিকে কেটে ফেলা হয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, গাছে কান পাতলে কথা শোনার বিষয়টি গুজব ছিল। তবে গাছ থেকে কথা শোনার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। কেন গাছ থেকে নারীকণ্ঠ শুনতে পাচ্ছেন অনেকেই? এ প্রশ্নের উত্তর রয়েছে মনোবিজ্ঞানে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

স্থানীয়রা জানান, গত এক সপ্তাহ আগে উপজেলার রাঘদি ইউনিয়নের গজিনা গ্রামে নিরব নামে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশু গাছটিতে ধারালো দা দিয়ে কোপ দিলে গাছ বলে ওঠে ‘আমাকে মারিস না’। পরে সে এ ঘটনা পাশের একজন মহিলাকে বললে, বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। দলে দলে এসে গাছে কান পেতে শোনার চেষ্টা করে সবাই। তাদেরও একই দাবি, গাছে কান পাতলে নারী কণ্ঠে কান্নার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কেউ সালামের উত্তর শুনছেন, আবার কেউ কান্না বা আর্তনাদের আওয়াজ শুনছেন। আবার অনেকেই বলছেন ভুয়া। কান পাতলে গাছ ও পাতা নড়ার শব্দ শোনা যায়।

এমন ঘটনা আশপাশের কয়েক এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গাছটি দেখতে ও কথা শুনতে ছুটে আসে উৎসুক জনতা। গাছটিকে পবিত্র আখ্যা দিয়ে গাছের চারপাশ ঘিরে বাঁশের বেড়া দেয় এলাকাবাসী। কেউ কেউ আবার মান্নত করে গাছের গোড়ায় ফেলতে থাকে টাকা। পরে কয়েকজন মুসল্লির অনুরোধে টাকা তোলা বন্ধ হয়।

এমন ঘটনায় মূলধারার বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন। শনিবার সকালে মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান ও স্থানীয় চেয়ারম্যান সাহিদুর রহমান টুটুলের হস্তক্ষেপে গাছটি কেটে ফেলা হয়। এ সময় গাছ কাঁটা দেখতে ভিড় করেন এলাকাবাসী।

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক নাহমিনা বেগম জানান, গাছে কান পাতলে কথা শোনা যায় এটার বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নাই। তবে গাছের একটি শক্ত নেটওয়ার্ক রুট রয়েছে। যা অনেকদূর নিয়ে বিস্তৃত। এর মাধ্যমে এক গাছ আরেক গাছকে উপকার করে থাকে। তবে গাছে কান পাতলে কথা শোনার বিষয়টি পুরোটাই কুসংস্কার।

এদিকে মুকসুদপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফুল আলম ও রাঘদি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সহিদুর রহমান টুটুল বলেন, গাছে কথা শোনা যায় বিষয়টি গুজব। আমাদের দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর আমরা ওই এলাকায় গিয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখি। বিষয়টি আমাদের কাছে ভুয়া মনে হয়েছে। এ ছাড়া আমরা কান পেতে দেখেছি। কোনো কথা শোনা যায় না। পরে আমরা গাছটি কেটে ফেলি।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]