প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ ইবাদত। ঈমান আনার পর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো নামাজ। একজন মুমিন যেখানে যে অবস্থায় থাকুক, তাকে নামাজ পড়তেই হবে। কেননা আল্লাহ তাআলার নির্দেশ, ‘নির্ধারিত সময়ে সালাত আদায় করা মুমিনদের জন্য অবশ্যকর্তব্য।’ (সুরা নিসা: ১০৩)
যে ব্যক্তি নামাজ পড়ে না তার ঈমান খুবই দুর্বল। ইসলামে তার হিস্যা খুব সামান্যই। মহানবী (স.) ইরশাদ করেছেন, যার মধ্যে নামাজ নেই, তার ভেতর দ্বীনের কোনো হিস্যা নেই। (মুসনাদে বাজ্জার: ৮৫৩৯)
‘নামাজ মুমিনের জন্য মেরাজস্বরূপ’ আরবিতে আসসালাতু মিরাজুল মুমিনিন—এটি আসলে হাদিস নয়। হাদিসের প্রসিদ্ধ কোনো গ্রন্থে বাক্যটি পাওয়া যায় না। বরং এটি একটি বহুল প্রচলিত উক্তি। তবে কথাটির মর্ম রয়েছে। এই প্রচলিত কথাটিকে সমর্থন করে—এমন একাধিক বিশুদ্ধ হাদিস রয়েছে। তাই বাক্যটিকে সরাসরি হাদিস না বলে বলা উচিত- বাক্যটি হাদিস দ্বারা সমর্থিত।
হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘মুমিন যখন নামাজে থাকে সে তার প্রতিপালকের সঙ্গে নিভৃতে কথা বলে।’ (সহিহ বুখারি: ৪১৩)
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ নামাজে দাঁড়ালে সে তার সামনের দিকে থুথু ফেলবে না। কেননা সে যতক্ষণ তার জায়নামাজে থাকে, ততক্ষণ মহান আল্লাহর সঙ্গে চুপে চুপে কথা বলে।’ (সহিহ বুখারি: ৪১৬)
উল্লেখিত হাদিস দুটিতে ‘নামাজ মুমিনের জন্য মিরাজস্বরূপ’ বাক্যটির সমর্থন পাওয়া যায়।
সুতরাং ‘নামাজ মুমিনের জন্য মেরাজস্বরূপ’ কথাটিকে সরাসরি হাদিস বলা যাবে না সত্য, তবে নামাজের সঙ্গে মেরাজের একটা সম্পর্ক আছে এটাও সত্য। কেননা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মেরাজের রাতে ফরজ হয়েছিল। (বুখারি: ৩৮৮৭; মুসলিম: ১৬২, ১৬৪)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রত্যহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যথাযথ আদায় করার তাওফিক দান করুন। হাদিস প্রচারের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বনের তাওফিক দান করুন। আমিন।