উড়োজাহাজে ভ্রমণের সময় অনেকের নানান ধরণের অসুবিধা হয়। বিমান বেশকিছু উপরে ওঠার পর অনেকের অস্বস্তি লাগে। কারও কারও বমি ভাব দেখা দেয়, আবার কারও মাথা হালকা থাকে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হয় বিমান থেকে নামার পর।
বিমানযাত্রা শেষে এয়ারপোর্টে পা রাখার পর অনেকেরই মাথা ঘুরে থাকে। কারও কারও আবার চোখের দৃষ্টি কিছুটা ঘোলা হয়ে যায়। সারাক্ষণ শরীর ম্যাজম্যাজ করতে থাকে। কোনো কাজেই মন দেওয়া যায় না।
একবার কি ভেবে দেখেছেন? দীর্ঘদিন মহাকাশে অবস্থান শেষে পৃথিবীতে ফিরে আসার পর নভোচারীদের কেমন অবস্থা হয়?
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) মহাকাশসংক্রান্ত নানা ধরনের গবেষণার চলে। ফলে গবেষণার প্রয়োজনের নভোচারীদের দীর্ঘ একটা সময় মহাকাশে থাকতে হয়। ফলে নভোচারীদের বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা হয়ে থাকে।
পৃথিবীতে ফিরে আসার পর নভোচারীদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা কেমন হয়, তা জেনে নেওয়া যাক।
নাসার বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, নভোচারীরা টানা ৬ মাস ওজনহীন অবস্থায় থাকার কারণে চোখের আকৃতির পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। এমনকি শরীরের তরল স্থানান্তরিত হয়ে কখনও কখনও দৃষ্টিশক্তিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বিভিন্ন গবেষণার তথ্যমতে, মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণের অভাবে নভোচারীদের হাড়ের ঘনত্ব কমে যায়। ফলে নভোচারীদের বাহু, পা ও কোমরের হাড়সহ হৃৎপিণ্ডের পেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মহাকাশে থাকার সময় মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিরুদ্ধে হৃৎপিণ্ডকে রক্ত পাম্প করতে হয় না, আর তাই রক্তের পরিমাণ সংকুচিত হয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্ত জমাটও বেঁধে যায়।
নভোচারীরা মহাকাশে ঘুমানোর সময় বিশেষ ধরনের স্লিপিং ব্যাগ ব্যাবহার করেন। শরীর স্থির রাখতে এই ব্যাগ ব্যাবহার করা হয়। এছাড়াও মহাকাশে শারীরিক নানান পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে নিয়মিত ব্যায়াম করেন। নিয়মিত ব্যায়াম না করলে নভোচারীদের শরীরের পেশি সংকুচিত হওয়ার পাশাপাশি হাড়েরও ক্ষতি হতে পারে।