ইসলামের বিধি-বিধানগুলো আল্লাহ তায়ালা প্রাপ্ত বয়স্ক নারী পুরুষের জন্য ফরজ করেছেন। ইসলামের বিধি-বিধান পালনের জন্য প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার শর্ত দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করার জন্য পরকালে জবাবদিহিতা করতে হবে প্রাপ্ত বয়স্কদের। বিধি-বিধান পালন না করার কারণে শিশুদের জবাবদিহিতা করতে হবে না। রোজাও প্রাপ্ত বয়স্ক, সুস্থ মস্তিস্ক নারী-পুরুষের জন্য ফরজ। তারা শরীয়ত নির্ধারিত কোনো কারণে রোজা রাখতে না পারলে পরে কাজা করে নিতে হবে। আর ইচ্ছাকৃত রোজা ভাঙলে কাজা কাফফারা দুটোই করতে হবে।
শিশুদের ওপর রোজা ফরজ নয়। শিশু থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পরই রোজার রাখতে হবে। তবে অভ্যস্ততার জন্য অনেক সময় অনেক শিশু রোজা রাখে। অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার কারণে শিশুদের কেউ কেউ পুরো রোজা রাখতে পারে না। দিনের কিছু সময় অতিবাহিত হওয়ার পর রোজা ভেঙে ফেলে। রোজা ভাঙার কারণে তাদের কাজা করতে হবে না। কারণ, শিশুদের ওপর রোজা ফরজ নয়। যেহেতু রোজা ফরজ নয়, তাই তাদের কাজা করার কোনো বিধান নেই।
রাসুল (সা.) বলেন, তিন প্রকারের ব্যক্তি থেকে (হিসাব-নিকাশের) কলম উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে—পাগল, ঘুমন্ত ব্যক্তি ও নাবালগ শিশু। -(আবু দাউদ, হাদিস : ৪৪০১)
শিশুদের রোজায় অভ্যস্ত করতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে পারেন—
১. শিশুদের কাছে রোজার ফজিলত সম্পর্কিত হাদিসগুলো তুলে ধরতে হবে। তাদের জানাতে হবে সিয়াম পালন জান্নাতে প্রবেশের মাধ্যম। জান্নাতের একটি দরজার নাম হচ্ছে আর-রাইয়্যান। এ দরজা দিয়ে শুধু রোজাদাররা প্রবেশ করবে।
২. প্রথমদিকে দিনের কিছু অংশে রোজা পালন করানো। ক্রমান্বয়ে সেই সময়কে বাড়িয়ে দেয়া।
৩. একেবারে শেষ সময়ে সাহরি গ্রহণ করা। এতে করে তাদের জন্য দিনের বেলায় রোজা পালন সহজ হবে।
৪. শিশুরা রোজা রাখলে প্রতিদিন বা প্রতি সপ্তাহে পুরস্কার দেয়া। এতে তারা রোজা পালনে উৎসাহিত হবে।
৫. ইফতার ও সেহরির সময় পরিবারের সব সদস্যের সামনে তাদের প্রশংসা করা। যাতে তাদের মানসিক উন্নয়ন ঘটে।
৬. যার একাধিক শিশু রয়েছে তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি করা। তবে খুবই সতর্কতার সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে, যাতে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়া শিশুটির প্রতি কঠোরতা প্রদর্শন করা না হয়।
৭. যেসব পরিবারের শিশুরা রোজা রাখে তাদের বাসায় বেড়াতে যাওয়ার জন্য দিনে বা রাতের কিছু সময় নির্দিষ্ট করে নেয়া। যাতে তারা সিয়াম পালন অব্যাহত রাখার প্রেরণা পায়।