নরম পিণ্ডাকৃতির চেহারার জন্য বিশ্বের সবচেয়ে কুৎসিত প্রাণী হিসেবে ডাকা হয় এই ব্লবফিশকে। সেই কুৎসিত চেহারার প্রাণীটিই এই সপ্তাহে নিউজিল্যান্ডের বছরের সেরা মাছ হিসেবে পুরষ্কার জিতেছে। একটি পরিবেশগত গোষ্ঠী ব্লবফিশকে এই খেতাব দিয়েছে।
মাউন্টেন টু সি কনজারভেশন ট্রাস্ট কর্তৃক আয়োজিত বার্ষিক এই প্রতিযোগিতার লক্ষ্য, নিউজিল্যান্ডের মিঠাপানি এবং সামুদ্রিক প্রাণীর প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি।
এই বছর ব্লবফিশ পাঁচ হাজার ৫০০ এরও বেশি ভোটের মধ্যে প্রায় এক হাজার ৩০০ ভোট পেয়ে পুরষ্কারটি জিতে নেয়।
মোলাস্ক ছাড়াও, ব্লবফিশ কাঁকড়া এবং গলদা চিংড়ির মতো মাছ পাশাপাশি সামুদ্রিক অর্চিনও খায়। কঙ্কাল এবং আঁশের পরিবর্তে, ব্লবফিশের একটি নরম শরীর এবং আঠালো ত্বক রয়েছে। নরম ও আঠালো মাছটি সমুদ্রের তলদেশে বাস করে এবং দৈর্ঘ্যে প্রায় ১২ ইঞ্চি (৩০ সেমি) পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।
এগুলো মূলত অস্ট্রেলিয়া এবং তাসমানিয়ার উপকূলে পাওয়া যায়। সেখানে তারা দুই হাজার থেকে চার হাজার ফুট (৬০০-১২০০ মিটার) গভীরতায় বাস করে।
যদিও ব্লবফিশটি তার বিকৃত আকৃতির জন্য পরিচিত, তবে গভীর সমুদ্রের প্রাকৃতিক আবাসস্থলে এটি আসলে একটি সাধারণ মাছের মতো। উচ্চ জলচাপের কারণে মাছটির আকৃতি ঠিক থাকে।
কিন্তু ধরা পড়লে এবং দ্রুত জলের পৃষ্ঠে আনা হলেই মাছটির আকৃতি বিকৃত হয়ে যায়, যা মাছটিকে বিশ্বের কুৎসিত প্রাণীদের মধ্যে একজন হওয়ার খ্যাতি এনে দিয়েছে।
এই প্রতিযোগিতাটির দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কমলা রঙের রাফি স্লাইমহেড পরিবারের একটি গভীর সমুদ্রের মাছ। মাছটি মাথার ওপর শ্লেষ্মাযুক্ত খালের জন্য বেশ পরিচিত।
মাউন্টেনস টু সি কনজারভেশন ট্রাস্টের সহ-পরিচালক কিম জোন্স বলেন, এটি গভীর সমুদ্রে বসবাস করা দুটি প্রাণীর লড়াই ছিল। দুটি অদ্ভুত গভীর সমুদ্রের প্রাণী।
তবে ব্লবফিশের এমন অদ্ভুত সৌন্দর্য ভোটারদের সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করেছে।’
স্থানীয় রেডিও স্টেশনের কয়েকজন উপস্থাপকও ব্লবফিশের জন্য একটি আবেগপূর্ণ প্রচারণা শুরু করেছিল। এর আগ পর্যন্ত কমলা রঙের রাফি জয়ের পথে ছিল। স্থানীয় রেডিও নেটওয়ার্ক মোর এফএম-এর উপস্থাপক সারাহ গ্যান্ডি এবং পল ফ্লিন গত সপ্তাহে তাদের শো শ্রোতাদের শুনতে অনুরোধ করেছিলেন। সেখানে তারা ব্লবফিশের ভোট চান। মাউন্টেনস টু সি কনজারভেশন ট্রাস্টের মতে, বছরের সেরা মাছের জন্য মনোনীত দশটির মাছের মধ্যে নয়টিকে সংরক্ষণ গোষ্ঠীগুলো ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করে। এর মধ্যে ব্লবফিশও রয়েছে।
নিউজিল্যান্ডে সংরক্ষণ সংস্থা ফরেস্ট অ্যান্ড বার্ড দ্বারা আয়োজিত একটি বর্ষসেরা পাখি প্রতিযোগিতাও রয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে মুকুট পরা সর্বশেষ বিজয়ী ছিল হোইহো, একটি বিরল পেঙ্গুইন প্রজাতি।