34634

03/19/2025 মজুরি কম, পেশা বদলাচ্ছেন পোশাক তৈরির কারিগররা

মজুরি কম, পেশা বদলাচ্ছেন পোশাক তৈরির কারিগররা

খুলনা ব্যুরো

১৯ মার্চ ২০২৫ ১৫:৩৮

ঈদকে সামনে রেখে পোশাক তৈরির কারিগরদের কর্মব্যস্ততা বেড়েছে। তবে মজুরি কম হওয়ায় পেশা বদলাচ্ছেন অনেকেই। নড়াইল জেলা শহরের বিভিন্ন কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, সেলোয়ার কামিজ, শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। তাদের এই কর্মযজ্ঞ শুধু ঈদকে ঘিরে। বছরের বাকি মাসগুলো কাজ কম থাকায় কারখানায় শুয়ে-বসে সময় পার করতে হয় তাদের। পরিশ্রমের তুলনায় মজুরিও কম। তাই বাধ্য হয়ে অনেকেই পেশা বদল করছেন।

মালিকদের কাছে অনেকটা অসহায় তারা। কিছু কারিগর দারিদ্র্যের কারণে টেইলার্স মালিকদের কাছ থেকে আগে থেকেই টাকা ঋণ নেন। সঠিক সময় সেটি ফেরত দিতে পারেন না। যার ফলে অন্য কোথাও কাজে যেতে পারেন না। নিরূপায় হয়ে তাদের সেই মালিকের কারখানায় কাজ করতে হয়। পোশাক তৈরির মজুরি বাড়লেও কারিগরদের শ্রমের মূল্য বাড়েনি।

এক কারিগর বলেন, আমরা প্রচুর পরিশ্রম করি। কিন্তু পারিশ্রমিক কম। যে টাকা আয় হয় তা সংসার চালানোর জন্য যথেষ্ট নয়। মজুরি কম হওয়ায় অনেক শ্রমিক এ পেশায় আসতে চান না।

অন্য একজন বলেন, ১২ বছর ধরে দর্জি কাজ করছি। দিনে আয় হয় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। এতে আমাদের সংসার চলে না। তাও করতে হয় কারণ এ কাজটা আমরা শিখে ফেলেছি। ঘর ভাড়া আছে সেইসঙ্গে ছেলে-মেয়ে নিয়ে সংসার চালানো কঠিন। এ কাজ কেউ আর করতে চায় না, এতে আয় কম।

বড়েন্দার গ্রামের সুমন মজুমদার বলেন, আমাদের গ্রামে অনেক রাজমিস্ত্রী আছেন। আমাদের তুলনায় তাদের কষ্ট অনেক কম, আবার মজুরি বেশি। তারা ভালো আছে। কিন্তু আমরা পিছিয়ে রয়েছি। একটি প্যান্টের মজুরি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। সেখানে আমরা পাচ্ছি ১৮০ থেকে ২২৫ টাকা। শার্ট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। আমরা পাচ্ছি ১৩৫ থেকে ১৪৫ টাকা। থ্রি-পিস ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, সেখানে আমরা পাই ১০০ থেকে ১৩০ টাকা। পাঞ্জাবি ৪৫০ থেকে ৫০০, আমরা পাই ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা। মজুরি কম হওয়ায় অনেকে পেশা বদল করছেন। কেউ কেউ বিদেশে চলে যাচ্ছেন।

দর্জি মালিক সমিতির সভাপতি ও রেক্স টেইলার্সের মালিক সুজিত মজুমদার বলেন, একটা প্যান্ট কাটালে তাদের আমরা ২২৫ টাকা দিচ্ছি। দিনে ৩টা প্যান্ট কাটতে পারলে তো তাদের মুজুরি যা হচ্ছে তা অসুবিধা হওয়ার কথা না। আমাদের নিজেদের ঘর ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ মিটিয়ে তেমন লাভ হয় না।

নড়াইল জেলা বিসিক কার্যালয়ের উপব্যবস্থাপক, প্রকৌশলী মো. সোলায়মান হোসেন বলেন, জেলার দর্জি কারিগরদের আমরা প্রশিক্ষণ দেওয়া, ক্ষুদ্র ঋণ সহায়তাসহ বিভিন্নভাবে সহায়তা করে থাকি। এই শিল্পকে ধরে রাখতে বিসিকের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]