বর্তমান সময়ে টিনএজারদের ডিজিটাল জগতে সক্রিয়তা যেমন আশ্চর্যজনক, তেমনি উদ্বেগেরও কারণ। স্মার্টফোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্ক্রিনে চোখ রাখা, রাত জেগে ভিডিও দেখা অথবা অনলাইনে অচেনা কারো সঙ্গে বন্ধুত্ব—এসবই একদিকে তাদের মানসিক ও শারীরিক সুস্থতাকে প্রভাবিত করছে, অন্যদিকে অনলাইনে ঝুঁকিপূর্ণ আচরণের দ্বারও খুলে দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে জনপ্রিয় ভিডিও-ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম টিকটক আবারও প্রমাণ করলো যে তারা শুধু বিনোদনের প্ল্যাটফর্ম নয় বরং দায়িত্ববান প্রযুক্তি কোম্পানি হিসেবেও কাজ করছে।
টিকটকের "ফ্যামিলি পেয়ারিং" হলো এমন একটি টুল, যার মাধ্যমে অভিভাবকরা তাদের কিশোর সন্তানদের টিকটক ব্যবহারের উপর নিয়ন্ত্রণ ও সহায়তা রাখতে পারেন। নতুন ফিচারগুলোর মাধ্যমে এই টুল আরও কার্যকর ও ব্যবহারবান্ধব হয়ে উঠেছে।
এই ফিচারের মাধ্যমে অভিভাবকরা এখন নির্ধারণ করতে পারবেন, কোন সময়টাতে তাদের সন্তান স্ক্রিন ব্যবহার করতে পারবে না।
যেমন - স্কুলের সময়, রাতে ঘুমের সময়, পরিবারের সময় কাটানোর সময়।
এই স্ক্রিনবিহীন সময় নির্ধারণের ফলে কিশোরদের মধ্যে ডিজিটাল ডিসিপ্লিন তৈরি হবে। সন্তান যদি অতিরিক্ত সময় চায়, অভিভাবক তার অনুরোধ পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন—ফলে এখানেও তৈরি হয় ভারসাম্যপূর্ণ অভিভাবকত্ব।
বর্তমানে শুধু সন্তান কতক্ষণ টিকটক ব্যবহার করছে তা জানাই যথেষ্ট নয়। তারা কাকে ফলো করছে, কে তাদের ফলো করছে, এমনকি কাকে ব্লক করেছে—এই তথ্যগুলো জানাও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। নতুন আপডেটে অভিভাবকরা সরাসরি এই বিষয়গুলো দেখতে পাবেন। এর ফলে পরিবারে সন্তানদের অনলাইন আচরণ নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করা সহজ হবে।
এই ফিচার আরও মানবিক এবং সচেতনমূলক। যদি কোনো টিনএজার ভিডিও রিপোর্ট করে, তাহলে সে চাইলেই সেই রিপোর্টের কপি অভিভাবক বা কোনো বিশ্বস্ত প্রাপ্তবয়স্ককে জানাতে পারবে— যদি ফ্যামিলি পেয়ারিং টুল অ্যাকটিভও না থাকে।
এটি শুধুমাত্র কনটেন্ট ফিল্টারিং নয়, বরং অনলাইন সুরক্ষায় পারিবারিক সহায়তা নিশ্চিত করার একটি অনন্য উদাহরণ।
অনেক কিশোররা রাতে ঘুম না গিয়ে টিকটক স্ক্রল করতে থাকে। টিকটক এবার এই সমস্যা সমাধানে এনেছে নতুন এক ফিচার: উইন্ড-ডাউন। এটি ১৬ বছরের নিচের ব্যবহারকারীদের জন্য চালু করা হয়েছে। রাত ১০টার পর স্ক্রিনে আসবে শান্ত সুরের ভিডিও এবং ‘ঘুমানোর সময় হয়েছে’ এমন বার্তা। ব্যবহার চালিয়ে গেলে আরও জোরালো রিমাইন্ডার আসবে।
প্রাথমিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বেশিরভাগ কিশোর নিজেরাই এই ফিচার চালু রেখেছে—যা একটি আত্মনিয়ন্ত্রণের অভ্যাস গড়ে তোলার দিকনির্দেশনা।