বান্দরবানে সাঙ্গু নদীতে গঙ্গা মায়ের উদ্দেশে ফুল ভাসানোর মধ্যে দিয়ে চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান বৈসাবি উদযাপন শুরু হয়েছে। বিশ্ববাসীর সুখ-শান্তি মঙ্গল কামনায় শনিবার সকালে ৭টায় বান্দরবানের বালাঘাটা পুরানো নদীঘাট এলাকার নদীর পানিতে ফুল উৎসর্গ করেন তারা। ফুল ভাসানোর জন্য ভোর থেকেই তরুণ-তরুণীরা সাঙ্গু নদীর পাড়ে এসে ভিড় করেন।
নতুন বছরকে বরণ এবং পুরনো বছরকে বিদায় জানানোর সামাজিক এ উৎসবকে চাকমা সম্প্রদায় বিজু এবং তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় বৈসু নামে যুগযুগ ধরে পালন করে আসছে। এবার তিনদিন ব্যাপী নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে বান্দরবান জেলার পাহাড়ী পল্লীগুলোতে।
উৎসবের প্রথমদিনে পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠীর তরুণ-তরুণীরা ভোর বেলায় ঘুম থেকে উঠে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ফুল সংগ্রহ করেন। সংগ্রহের পর ফুলের একটি অংশ মন্দিরে গৌতম বুদ্ধের প্রার্থনায় ব্যবহার করেন। আরেকটি অংশ নদীতে বা পানিতে অবস্থানরত গঙ্গা মায়ের চরণে উৎসর্গ করেন। এটিকে নদীতে ফুল ভাসানো বলেও সম্মোধন করে।
উৎসবে অংশ নেওয়া চাকমা সম্প্রদায়ের তরুণী জেসলি চাকমা ও লিলি চাকমা বলেন, নদীতে ফুল উৎসর্গের মাধ্যমে পুরনো বছরের যতসব অমঙ্গল এবং দুঃখ-কষ্ট ভাসিয়ে দেওয়া হয়। পরেরদিন ধুয়ে মুছে ফুল দিয়ে ঘর সাজানোর মধ্যদিয়ে নতুন বছরকে বরণ করা হয়।
ত্রিপুরা ভাষায় বৈসু, মারমা ভাষায় সাংগ্রাই ও চাকমা-তঞ্চঙ্গ্যা ভাষায় বিঝু-কে একসঙ্গে বলা হয় এই বৈসাবি উৎসব। এ উৎসবের মাধ্যমে পুরাতন বছরকে বিদায় দিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেন এ অঞ্চলের মানুষ। পাহাড়ে ১১টি আদিবাসী সম্প্রদায় তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে আয়োজন করে থাকে নানা রকম কর্মসূচি। রঙ-বেরঙের পোষাকে শিশু-কিশোররা ঘুরে বেড়ায় বাড়ি-বাড়ি। এছাড়া পাহাড়ি পল্লীগুলোতে চলে ঐতিহ্যবাহী পাচনসহ মজাদার সব খাবার তৈরি করে অতিথিদের আপ্প্যায়ন। বিহারগুলোতে চলে ধর্মীয় প্রার্থনা।