ঋতুবৈচিত্র্যের দেশ বাংলাদেশ। এ দেশে সারা বছরই কোনো না কোনো ফলের সমারোহ থাকে। বিশেষ করে গ্রীষ্মের তীব্র গরমে নানা প্রজাতির রসালো ফলের সুবাস বিরাজ করে চারপাশে।
বাজারে ফলের দোকানে, রাস্তার ধারে থরে থরে সাজানো আম, কাঁঠাল, লিচু, তরমুজ, কালোজাম, বাঙ্গিসহ নানা রকম রসালো ফল দেখা যায়। মিষ্টি ফলের লোভনীয় গন্ধ মৌ মৌ করে বাতাস। ফল-রসে রসনা তৃপ্তির অপূর্ব আনন্দময় মাস।
এই ফলগুলো আল্লাহ তায়ালার নেয়ামত। আল্লাহর ইচ্ছায় প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন এসব ফলমূলে পরিমিত পরিমাণ পানি বিদ্যমান থাকায় যেকোনো সময় খাবার উপযোগী এসব ফল। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন—
‘আমি ভুমিকে বিস্তৃত করেছি ও তাতে পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং তাতে নয়নাভিরাম সর্বপ্রকার উদ্ভিদ উদ্গত করেছি। আর আমি আকাশ থেকে কল্যাণময় বৃষ্টিবর্ষণ করি এবং এর দ্বারা উদ্যান ও পরিপক্ক শস্যরাজি উদ্গত করি, যেগুলোর ফল ও ফসল আহরণ করা হয়।’ (সূরা কাফ, আয়াত : ৭-৯)।
আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন, ‘তিনি তোমাদের জন্য বৃষ্টির দ্বারা উৎপাদন করেন ফসল, জয়তুন, খেজুর, আঙুর এবং সর্বপ্রকার ফলমূল। নিশ্চয়ই এতে চিন্তাশীলদের জন্য রয়েছে নিদর্শন।’ (সূরা নাহল, আয়াত : ১১)
আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু-সহ যেসব ফল খাই আমরা এগুলোতে অনেক সময় পোকা হয়। কোনো ফলে পোকা হলে সেই ফল খাওয়ার বিষয়ে ইসলামী আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের মতামত হলো—
যদি পোকায় প্রাণ থাকে, তাহলে সেই পোকাসহ ফল খাওয়া জায়েজ নয়। বরং তা ফেলে দিয়ে খাওয়া যাবে।
আর যদি পোকায় প্রাণ না থাকে, তাহলেও পরিস্কার করে খাওয়া উচিত। তবে সম্ভব না হলে তাসহই খাওয়া জায়েজ আছে। কিন্তু প্রাণ থাকলে পোকা ফেলে খাওয়া আবশ্যক।
তবে ফলে হওয়া পোকাগুলো যদি একেবারে অল্প ও এতো ছোট হয় যে, সেগুলো খুঁজে পাওয়া কঠিন সেক্ষেত্রে তা ক্ষমাযোগ্য। কেননা শরিয়তের উদ্দেশ্য কাঠিন্য ও কষ্ট লাঘব করা।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তিনি তোমাদের জন্য কঠিন করতে চান না। (সূরা বাকারা, আয়াত : ১৮৫)
আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন, আল্লাহ তোমাদের উপর জটিলতা আরোপ করতে চান না। (সূরা মায়িদা, আয়াত : ৬)