নিজের শহরের মানুষকে এক অসাধারণ উপহার দিয়েছেন ‘হলিউড মুঘল’ নামে খ্যাত মার্কিন শিল্পোদ্যোগী ব্যারন বেরি ডিল্লর।
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে চমকপ্রদ একটি স্থাপত্য। খরচও হয়েছে বিস্তর। হাডসন নদীর ওপর প্রায় ২৬৫ মিলিয়ন ডলার (২১২০ কোটি টাকা) ব্যয়ে নির্মাণ করেছেন দর্শনীয় ভাসমান পার্ক।
বেরি ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে নির্মিত উদ্যানটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় ২১ মে। দ্য হিল।
নাম লিটল আইল্যান্ড হলেও এর পরিসর অনেক বড়। ২.৪ একর জায়গাজুড়ে নির্মিত এই পার্কে রয়েছে ৬৮৭ আসনের একটি বিশাল অডিটোরিয়াম, যেখানে বড় বড় কনসার্ট বা অনুষ্ঠান করা সম্ভব হবে।
আছে ৪০০-র বেশি প্রজাতির গাছ, যা দেখে শুরুতে আপত্তি জানানো পরিবেশবাদীরাও ভড়কে গিয়েছেন। নকশাবিদ হিদারউইক জানিয়েছেন, প্রযুক্তিগতভাবেও সমৃদ্ধ হয়েছে এই উদ্যান।
বেরি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ব্যবসায়ী ও সংস্কৃতিমনা শিল্পোদ্যোক্তা। হলিউডের বিখ্যাত প্রোডাকশন হাউজ প্যারামাউন্ট পিকচার্স, টুয়েন্টিথ সেঞ্চুরি ফক্স-এর সিইও ছিলেন তিনি।
আট বছর আগে ম্যানহাটনের পশ্চিম দিকের এই ভাসমান উদ্যান তৈরির পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। নদীর ওপর ভাসমান এই উদ্যান থেকে একদিকে দেখা যাবে হাডসন নদী। আর অন্যদিকে, নিউইয়র্কের ম্যানহাটন শহর।
কিন্তু পরিকল্পনার পরপরই বাধার সম্মুখীন হতে হয় তাকে। পরিবেশবাদীদের বাধার মুখেই পার্কটি নির্মাণের কাজ এগিয়ে নেন তিনি। তবে ২০১৭ সালে একবার ভেবেছিলেন ফিরে আসবেন, কাজটি শেষ করার ইচ্ছে উবে গিয়েছিল তার। মামলা হওয়ায় এ নিয়ে আদালত পর্যন্ত যেতে হয়েছিল তাকে।
অভিযোগ উঠেছিল, এই কাজ হলে নদীর বাস্তুতন্ত্র প্রবলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু শেষমেশ জয়ী হন তিনি। ম্যানহাটনের ওয়েস্ট ফরটিন্থ স্ট্রিটের এই পার্কটিকে নদীর ওপর শক্তভাবে দাঁড় করাতে টিউলিপ আদলের ১৩২টি পাইল ব্যবহার করা হয়েছে।
এখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি মঞ্চ, যেখান থেকে লাইভ অনুষ্ঠান করা যেতে পারে। তিনি মঞ্চ এলাকাটির নাম দিয়েছেন আউটডোর নাইটক্লাব। ১৫ জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫০০টি অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা রয়েছে উদ্যান কর্তৃপক্ষের। উদ্যানে প্রবেশের জন্য দুটি দৃষ্টিনন্দন ব্রিজও তৈরি করেছে কর্তৃপক্ষ। এই উদ্যান সবার জন্য সকাল ৬টার সময় খুলে দেওয়া হবে।
খোলা থাকবে বেলা ১টা পর্যন্ত। বিকালে কী করা হবে, তা পরে জানিয়ে দেবেন তারা। বেরি জানিয়েছেন, আমি নিউইয়র্ক শহরের মানুষের জন্য চমকপ্রদ কিছু বানাতে চেয়েছিলাম।
এটি এমন একটা জায়গা, যেখানে গেলে কারও মন খারাপ থাকলে ভালো হয়ে যাবে। আমার মনে হয় শুধু নিউইয়র্কের বাসিন্দারাই নন, মার্কিন মুলুকের সবাই এখানে আসার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকবেন। বেরি ডিল্লরের ৭৪ বছর বয়সি বেলজিয়ান স্ত্রী ফ্যাশন ডিজাইনার ডায়ানে ভন ফার্স্টেনবার্গ জানান, ডিল্লরের অনেক দিনের স্বপ্ন পূরণ হলো।