স্বাদ, পুষ্টি ও গন্ধে অতুলনীয় জনপ্রিয় একটি ফল আম। সুস্বাদু এই ফলটি খেতে পছন্দ করেন না, এমন মানুষ বোধহয় খুঁজে পাওয়া মুশকিল। বাজারে গেলেই পাওয়া যায় অনেক জাতের আম। এদের মধ্যে অন্যতম হলো- ল্যাংড়া, হিমসাগর ও ফজলি।
কিন্তু জানেন কী বাজারে এমন আমও আছে, যা আকৃতিতে সাধারণ মানুষের হাতের তালুর থেকেও বড়। অর্থাৎ আকারে প্রায় এক ফুট। ওজনও দুই থেকে তিন কেজি। আর দাম! একেকটি আম বিক্রি হয় ৫০০ থেকে ১০০০ টাকায়। এমনকী কখনও কখনও সেই আমের দাম ছুঁয়ে ফেলে ১২০০ টাকাও। হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। আর সেই আমের নামও বেশ মজাদার-‘নুরজাহান’।
সোমবার (০৭ জুন) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, দেশটির মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের আলিরাজপুরের কাট্ঠিওয়ারাতেই একমাত্র এই আমের চাষ হয়। মাত্র কয়েকটিই এই আমের গাছ রয়েছে সেখানে।
তবে এ আমের উৎপত্তি আফগানিস্তানে। কীভাবে আফগানিস্তান থেকে ভারতে পৌঁছাল এই গাছের প্রজাতি, তা জানাতে পারেনি দেশটির কৃষিবিদরা। তার এ রকম অদ্ভুত নামকরণের সঙ্গে সম্রাজ্ঞী নুরজাহানের কোনো সম্পর্ক রয়েছে কি না, সেটিও স্পষ্ট না।
কাট্ঠিওয়ারার এক নুরজাহান আমচাষি শিবরাজ সিংহ জানিয়েছেন, ১৯৬৮ সালে এই আমের চারা গুজরাটে আনা হয়েছিল। তার বাবা ঠাকুর পি সিংহ গুজরাট থেকে ওই বছর চারাগাছ কিনে মধ্যপ্রদেশে আনেন। মধ্যপ্রদেশের কাট্ঠিওয়ারায় তাদের বাগানে ওই চারাগাছগুলো রোপণ করেছিলেন তিনি। বর্তামানে ৬টি নুরজাহান আম গাছ রয়েছে। সেগুলো আজও ফল দিচ্ছে।
তিনি আরও জানান, চলতি বছর ২৫০টি নুরজাহান আম ফলেছে তার বাগানে। তবে পাকার অনেক আগেই সেগুলো গাছে থাকা অবস্থাতেই কিনে ফেলেছেন অনেকে। এই আমের চাহিদা নাকি এমনই। এক একটি আম বিক্রি হয়েছে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকায়। একেকটি আম ২ কেজি থেকে শুরু করে সাড়ে ৩ কেজিও হয়েছে।
কৃষিবিদরা জানাচ্ছেন, আগে একটি নুরজাহান আমের ওজন নাকি হত অন্তত ৫ কেজি। যা লম্বায় হত ১ ফুট পর্যন্ত! জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে নুরজাহানের চেহারায় অনেক বদল এসেছে। দৈর্ঘ্যও কমেছে, ওজনও কমেছে। কিন্তু আম ভক্তদের কাছে কদর এতটুকু কমেনি তার।
জানা গেছে, দেশটির মধ্যপ্রদেশ সরকার এই বিরল প্রজাতির আম গাছ সংরক্ষণের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে। এই বিরল প্রজাতির আমের জন্য পেটেন্ট-এর আবেদনও করেছে।