সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় বরিশাল সদর উপজেলার ইউএনও মুনিবুর রহমান, কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি নূরুল ইসলাম, উপপুলিশ পরিদর্শক মো. শাহজালাল মল্লিকসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলার আবেদন দাখিল করা হয়েছে।
রোববার (২২ আগষ্ট) অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন এবং একই প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. বাবুল হাওলাদার বাদী হয়ে ওই মামলা দুটির আবেদন করেন।
এদিকে একই আদালতে ইউএনও মুনিবুর রহমানের ওপর হামলা চেষ্টার ঘটনায় গ্রেফতার আওয়ামী লীগের ২১ নেতাকর্মীর জামিনের আবেদন করা হলে বিচারক সেই আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারা হেফাজতে রেখে সুচিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
রফিকুল ইসলাম খোকন এবং মো. বাবুলের করা মামলার আবেদনে ইউএনও মুনিবুর রহমানের বিরুদ্ধে বিসিসির কাজে বাধা দান, বিনা উসকানিতে বিসিসির কর্মচারীদের ওপর গুলিবর্ষণের নির্দেশ প্রদান, হামলা, গুলির মাধ্যমে একাধিক ব্যক্তির অঙ্গহানি এবং ৩০-৪০ জনকে আহত করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার আবেদনে ইউএনও ছাড়াও ১৮ আগস্ট রাতে তার বাসভবনে দায়িত্বরত আনসার সদস্যসহ আরও ৪০-৫০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
বাদীর পক্ষে আইনজীবী ও বরিশাল আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাইয়ুম খান কায়সার জানান, আবেদনের শুনানি শেষে বিজ্ঞবিচারক মাসুম বিল্লাহ সিদ্ধান্ত ঘোষণার জন্য রেখেছেন। তিনি সিদ্ধান্ত দেওয়ার পর জানা যাবে যে, মামলাটি গ্রহণ নাকি খারিজ করা হলো।
একই আদালতে সকালে আওয়ামী লীগের ২১ নেতাকর্মীর জামিনের আবেদন জানান তাদের আইনজীবী। ১৮ আগস্ট রাতে ইউএনও মুনিবুর রহমানের বাসায় হামলা চেষ্টার ঘটনায় করা পৃথক দুটি মামলায় তাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের জেলহাজতে রেখে সুচিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, বরিশালে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে পাঁচজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। বুধবার রাতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমানের সরকারি বাসভবনে হামলা কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহও আঘাতপ্রাপ্ত হন বলে তিনি দাবি করেছেন। আহতদের মধ্যে তিন পুলিশ ও দুই আনসার সদস্য রয়েছেন।
ঘটনার প্রতিবাদে রাতেই নেতাকর্মীরা নগরীর রূপাতলী ও নথুল্লাবাদ টার্মিনাল এলাকায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন। একই সঙ্গে তারা বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বন্ধ করে দেন অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লা রুটের লঞ্চ চলাচল। পরে প্রশাসনের সঙ্গে সমঝোতা বৈঠক শেষে দুপুর ১২টার পর বাস-লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এদিকে ইউএনওর বাসভবনে হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কয়েকশ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। উভয় মামলায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিক আব্দুল্লাহকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।