5888

09/20/2024 জাপান থেকে আসা দুই মেয়েশিশু আদালতে

জাপান থেকে আসা দুই মেয়েশিশু আদালতে

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩১ আগস্ট ২০২১ ২০:০৮

দুই মেয়েশিশুর জিম্মা চেয়ে জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো হাইকোর্টে রিট করেছিলেন। হাইকোর্ট আজ (৩১ আগস্ট) দুই শিশুকে হাজির করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে অনুসারে দুই শিশু আজ আদালতে এসেছে।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক স্বামী শরীফ ইমরানের কাছ থেকে ১০ ও ১১ বছর বয়সী দুই মেয়েসন্তানকে ফিরে পেতে ১৯ আগস্ট হাইকোর্টে রিট করেন জাপানি নারী এরিকো। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট আজ (৩১ আগস্ট) দুই শিশুকে আদালতে হাজির করতে তাদের বাবা ও ফুফুকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

২২ আগস্ট দুই শিশুকে ইমরানের বারিধারার বাসা থেকে উদ্ধার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারপর থেকে তারা উইমেন সাপোর্ট সেন্টারে ছিল।

আজ সকাল ১০টার পর সিআইডির তত্ত্বাবধানে দুই শিশু আদালতে উপস্থিত হয়। শিশু দুটি একে অন্যের হাত ধরে ধীরপায়ে আদালত কক্ষের দিকে যায়। এ সময় তাদের কিছুটা হতবিহ্বল মনে হচ্ছিল।

শিশু দুটি আসার কিছুক্ষণ পর আদালতে হাজির হন তাদের বাবা শরীফ ইমরান। তিনি সাংবাদিকদের জানান, তিনি ও তাঁর স্ত্রী এরিকো আজ সকালে উইমেন সাপোর্ট সেন্টারে গিয়েছিলেন। এরিকোও আদালতে হাজির হয়েছেন।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে আজ শুনানি হচ্ছে। এরিকোর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির এ তথ্য জানিয়েছেন।

এরিকো পেশায় চিকিৎসক। তাঁর আইনজীবী শিশির মনিরের তথ্যমতে, জাপানি আইন অনুসারে এরিকো (৪৬) ও ইমরান (৫৮) ২০০৮ সালের ১১ জুলাই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁরা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। এক যুগের দাম্পত্যজীবনে তাঁদের তিন মেয়েসন্তানের জন্ম হয়। বর্তমানে তাঁদের বয়স যথাক্রমে ১১, ১০ ও ৭ বছর। তিন মেয়ে টোকিওর একটি স্কুলে পড়ছিল। চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। গত ২১ জানুয়ারি ইমরান টোকিওর স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁর এক মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন। তবে এরিকোর সম্মতি না থাকায় স্কুল কর্তৃপক্ষ ইমরানের আবেদন নাকচ করে।

শিশির মনির জানান, পরবর্তী সময়ে স্কুলবাসে করে বাড়ি ফেরার পথে বাসস্টপেজ থেকে ইমরান বড় দুই মেয়েকে (১১ ও ১০) অন্য একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। ২৫ জানুয়ারি ইমরান তাঁর আইনজীবীর মাধ্যমে এরিকোর কাছে সন্তানদের পাসপোর্ট হস্তান্তরের আবেদন করেন। কিন্তু এরিকো তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরিকো ২৮ জানুয়ারি টোকিওর পারিবারিক আদালতে তাঁর সন্তানদের জিম্মার জন্য আদেশ চেয়ে মামলা করেন। আদালত ৭, ১১ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক সাক্ষাতের আদেশ দেন। তবে এই আদেশ ভঙ্গ করে ইমরান শুধু একবার মায়ের সঙ্গে বড় দুই মেয়ের সাক্ষাতের সুযোগ দেন।

এরিকোর আইনজীবীর ভাষ্যমতে, ৯ ফেব্রুয়ারি মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ইমরান মেয়েদের জন্য নতুন পাসপোর্টের আবেদন করেন। ১৭ ফেব্রুয়ারি নতুন পাসপোর্ট গ্রহণ করেন। ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে নিয়ে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। ৩১ মে টোকিওর পারিবারিক আদালত এরিকোর অনুকূলে বড় দুই মেয়ের জিম্মা হস্তান্তরে আদেশ দেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে এরিকো এত দিন বাংলাদেশ আসতে পারেননি। ছোট মেয়েকে মায়ের কাছে রেখে ১৮ জুলাই শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশে আসেন এরিকো।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]