থাইরয়েডের সমস্যা সামলানো বেশ ঝক্কির। মূলত হরমোনের তারতম্যের জন্যেই এই রোগ দেখা যায়। গলার কাছে একটি ছোট্ট গ্ল্যান্ডের নাম থাইরয়েড। যখন এই গ্ল্যান্ড খুব বেশি পরিমাণে কাজ করতে শুরু করে, কিংবা প্রয়োজনের তুলনায় কম কাজ করে, তখনই এই রোগ দেখা দেয়। হরমোনের তারতম্য তখন খাওয়াদাওয়ার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।
হাইপোথাইরয়েডিজম থাকলে শরীরের থাইরয়েড গ্ল্যান্ড পরিমাণ মতো হরমোন ক্ষরণ করে না। তাই চুল পড়ে যাওয়া, হৃদস্পন্দন কমে যাওয়া, বিপাক হার কমে ওজন বেড়ে যাওয়ার মতো নানা সমস্যা দেখা দেয়। তাই খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ করা বিশেষ প্রয়োজন হয়ে পড়ে। কোন খাবারগুলি এই অসুখ থাকলে এড়িয়ে চলাই শ্রেয়, জেনে নিন।
১। সয়াবিন বা সয়াবিন জাত সব খাবার
বেশ কিছু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে সয়ার খাবার খেলে থাইরয়েডের ওষুধ ঠিক মতো কাজ না-ও করতে পারে। তাই সয়াবিন, সয়ার দুধ, টফুর মতো খাবার মেপে খাওয়াই ভাল।
২। বাঁধাকপি-ফুলকপি
কপির মতো যে কোনও খাবারেও সমস্যা হতে পারে থাইরয়েডের ওষুধে। অনেকেই ওজন ঝরাতে ফুলকপি বা কেল পাতার মতো শাক-সব্জি রাখেন ডায়েটে। কিন্তু থাইরয়েড থাকলে এগুলি মেপে খাওয়া বিশেষ প্রয়োজন।
৩। সাধারণ লবণ
সমস্যাটা লবণের কোনো উপাদান নিয়ে নয়, সমস্যা হলো লবণে কি নেই তা নিয়ে। আপনি সম্ভবত ইতোমধ্যে জানেন যে থাইরয়েড গ্রন্থির সঠিক কার্যক্রমের জন্য আয়োডিনের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু সাধারণ লবণে এই মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট থাকে না। কিন্তু আয়োডিনের অভাবে পর্যাপ্ত থাইরয়েড হরমোন উৎপাদন হয় না।
৪। কফি
ক্যাফেইন এমনিতেই শরীরের নানা রকম ক্ষতি করে। থাইরয়েড থাকলেও অত্যধিক ক্যাফেইন আরওই এড়িয়ে যেতে হবে। তবে একদম ছেড়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। সকালের দিকে খেতে পারেন। বেলা বাড়ার পর আর না খাওয়াই ভাল।
৫। মিষ্টি
যে কোনও খাবার যাতে চিনি বা বাড়তি মিষ্টি দেওয়া হয়েছে, তা ডায়েট থেকে বাদ দিন। থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই চিনি এড়িয়ে চলাই ভাল। চিনির বদলে গুড় বা মধু কিছু রান্নায় ব্যবহার করতে পারেন।
৬। প্যাকেটের খাবার
যে খাবার বাজারে তৈরি প্যাকেটবন্দি তাতে বাড়তি নুন চিনি এবং তেল থাকবেই। তাই এই ধরনের খাবার এড়িয়ে চলুন। প্রসেস করার খাবারও খাবেন না।
৭। দুগ্ধজাত খাবার
এখন বেশির ভাগ চিকিৎসকই মনে করেন, দুগ্ধজাত খাবার শরীরে হরমোনের তারতম্য আরও বাড়িয়ে দেয়। তাই দুধ, মাখন, চিজের মতো খাবার এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। তবে দই হজমের পক্ষে খুবই উপকারি। দই খাওয়া যাবে কি না, তা এক বার নিজের চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করে নিন।
৮। চিনি
স্বাস্থ্যের ওপর কুপ্রভাব ফেলার কারণে চিনি ইতোমধ্যে যথেষ্ট দুর্নাম কুড়িয়েছে। এখন আরেকটি তথ্য জানলে চিনির প্রতি আপনার আগ্রহ আরো কমে যাবে: থাইরয়েড রোগে টাইপ ২ ডায়াবেটিস ও হার্ট-রক্তনালীর ঝুঁকি বেড়ে যায়। এসময় বেশি চিনি খেলে রোগগুলোর ঝুঁকি আকাশচুম্বী হয়। তাই ঝুঁকি কমাতে চিনি সীমিত করুন।