ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ ইভ লু দ্রিয়া অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রকে একটি নতুন নিরাপত্তা চুক্তি নিয়ে মিথ্যাচারের অভিযোগ করেছেন।
ফ্রান্সের দুই টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ ইভ লু দ্রিয়া দেশগুলিকে ‘বিশ্বাস ও অবমাননার একটি বড় লঙ্ঘন’ বলে অভিযুক্ত করেছেন। খবর বিবিসির
ফ্রান্সের এমন অভিযোগের কারণ ‘অকাস’ নামের একটি নিরাপত্তা চুক্তি।
চীনকে মোকাবিলা করতে প্রভাবশালী পশ্চিমা তিনটি দেশ যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার উদ্যোগে অকাস নামের একটি নিরাপত্তা চুক্তির কথা ঘোষণা করার কয়েক দিন পরেই এই সমঝোতা বড় ধরনের সমালোচনার মুখে পড়েছে।
ঐতিহাসিক এই চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের পক্ষ থেকে অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের জন্য উন্নত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি সরবরাহ কথা বলা হয়েছে।
পরমাণু শক্তিধর দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের শক্তিধর সদস্য ফ্রান্স এই চুক্তির কঠোর সমালোচনা করেছে। অকাসের তীব্র নিন্দা করে বলেছে এর মাধ্যমে তাদের ‘পিঠে ছুরি মারা হয়েছে।
প্যারিস এর প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়ায় তাদের নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েছে।
পশ্চিমা কোনো মিত্র দেশ থেকে রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠানো খুবই অস্বাভাবিক ঘটনা। এবং যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া থেকে ফ্রান্স তাদের রাষ্ট্রদূতদের এই প্রথমবারের মতো ডেকে পাঠাল।
গতকাল শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিত্রদের মধ্যে ‘গুরুতর সংকট’ চলছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্সের সম্পর্কের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আমরা আমাদের রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করেছি। এটি একটি গুরুতর রাজনৈতিক কাজ, যা আমাদের দেশগুলির মধ্যে বর্তমানে যে সংকট রয়েছে তা স্পষ্ট করে তুলেছে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রদূতদের ‘পরিস্থিতি পুনর্মূল্যায়ন’ করার জন্য তলব করা হচ্ছে।
নবগঠিত অকাস জোটের তিনটি দেশ যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছে তাতে পরমাণু শক্তি-চালিত সাবমেরিন বা ডুবোজাহাজ তৈরির জন্য অস্ট্রেলিয়াকে প্রযুক্তি সরবরাহ করার কথা বলা হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণে অ্যাডেলেইডে এসব সাবমেরিন নির্মাণ করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার এই নতুন উদ্যোগে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ হয়েছে প্যারিস। কারণ তারা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই চুক্তির ফলে অস্ট্রেলিয়ার সাথে তাদের পূর্ব-স্বাক্ষরিত বহু কোটি ডলারের একটি সমঝোতার অবসান ঘটেছে।
২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্সের মধ্যে ৩,৭০০ কোটি ডলার মূল্যের সেই চুক্তি সই হয়েছিল, যার আওতায় অস্ট্রেলিয়ার জন্য ১২টি সাবমেরিন নির্মাণ করার কথা ছিল।
নতুন এই জোট গঠনের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে ফ্রান্সকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়।