সুখ প্রকাশের অন্যতম উপাদান হচ্ছে হাসি। গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বজুড়ে হাসি একটি অন্যতম যোগাযোগের মাধ্যম। হাসি এক ধরনের মুখমণ্ডলীয় বহিঃপ্রকাশ, মানুষের সুখ, মজা, আনন্দ-এসবের জন্যই হাসির প্রচলন বিদ্যমান। হাসি মানুষের শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তির মাধ্যমে সুস্থ রাখতে ভীষণ কার্যকরী। হাসিখুশি মুখ দেখতেও ভালো লাগে। তাই প্রাণখুলে হাসুন এবং অন্যকেও হাসান।
হাসির তাৎক্ষণিক উপকারিতার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি উপকারিতাও বিদ্যমান।
১. মানসিক চাপমুক্ত করে : হাসলে মানসিক চাপ কমে যায়। হাসির সময় আমাদের শরীরে অ্যান্ডোরফিন হরমোনের ক্ষরণ হয়, যা স্ট্রেস হরমোন নামে পরিচিত কর্টিসল হরমোনের কার্যক্ষমতাকে কমিয়ে ফেলে। এতে মানসিক চাপ দূর হয় এবং আমাদের হারানো আত্মবিশ্বাসও ফিরে আসে। সুতরাং প্রাণ খুলে হাসুন।
২. বন্ধন মজবুত করে : যদি দুজন মানুষ একসঙ্গে প্রাণ খুলে হাসতে পারেন, তাহলে দুজনের মধ্যে মনোমালিন্য হওয়ার আশঙ্কা বেশ কম। হাসি দলীয় বন্ধন (টিমওয়ার্ক) মজবুত করে।
৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : হাসি শরীরে স্ট্রেস হরমোনের উৎপাদন কমিয়ে দেয় এবং রোগ প্রতিরোধক শ্বেত রক্তকণিকার উৎপাদন বৃদ্ধি করে। ফলাফল মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।
৪. অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়ায় : হাসার কারণে ফুসফুস প্রসারিত হয়। ফলে আমাদের শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। রক্তের মাধ্যমে ফুসফুসে বিশুদ্ধ অক্সিজেন প্রবেশ করে, যা পরবর্তী সময়ে আমাদের শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে নানা রোগের প্রকোপ কমে যায়।
৫. রাগ কমাতে সাহায্য করে : হাসির মতো কোনো কিছুই এত দ্রুত রাগ প্রশমিত করতে সাহায্য করে না। কোনো সমস্যার মজার দিকটায় নজর দিলে অনেক সময় সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজে পাওয়া যায়। তিক্ততা বা বিরক্তির সঙ্গে কোনো ধরনের সংঘর্ষে না জড়িয়ে সমস্যার সমাধান করা যায়।
৬. রক্তচাপ কমায় : বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, হাসার সময় শরীরে রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়, রক্তনালিগুলো প্রসারিত হতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শিরা-ধমনির ওপর চাপ কম পড়ে। আর এর ফলে উচ্চরক্তচাপ কমায়। তাই রক্তচাপ কমাতে প্রফুল্ল থাকুন এবং প্রচুর হাসুন।