ইউক্রেনে আক্রমনের আগ থেকে এ যুদ্ধে ভাড়াটে সেনা ঠিক করে রাশিয়া। সিরিয়ার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে যুদ্ধের শুরু থেকেই ইউক্রেনে ভাড়াটে সেনা নিয়োগ করেন পুতিন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি’র অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমন বিষ্ময়কর তথ্য।
বিবিসি জানায়, ইউক্রেনে ভাড়াটে সেনা নিয়োগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং গোপন মেসেজিং গ্রুপ ব্যবহার করে রাশিয়া। তথ্যের সূত্র হিসেবে, যারা ইতোমধ্যে রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে এমন ভাড়াটে সেনা এবং রাশিয়ার প্রধান ভাড়াটে সেনা সরবরাহকারী সংগঠনের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে এমন এক সাবেক যোদ্ধার সাথে কথা বলেন গণমাধ্যমটির প্রতিনিধি। কিভাবে সেনা ভাড়া করা হয় সে ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য দেয় তারা।
ইউক্রেনে যুদ্ধ করছেন এমন ভাড়াটে সেনারা জানান, যুদ্ধ শুরুর কয়েক সপ্তাহ আগে রাশিয়ার গোপন সংগঠন ওয়্যাগনার, গ্রুপ সদস্যদের সাথে টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করে। ওই মেসেজে ইউক্রেনে 'পিকনিক' করতে যাওয়ার আমন্ত্রণ দেয়া হয়। যেখানে শুকরের চর্বি দিয়ে তৈরি 'স্যালো' নামে একটি ইউক্রেনিয়ান খাবারের স্বাদ নেয়ার আহবান করা হয়। মেসেজগুলোতে "যাদের পূর্বে কোন অপরাধের সাথে সম্পৃক্ততা ছিল, ঋণগ্রস্ত, ভাড়াটে কোন গ্রুপের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা কিংবা যাদের কোন পাসপোর্ট নেই এমন ব্যক্তিদের যোগ দেয়ার আবেদন করতে বলা হয়। আরো বলা হয় যে, "যারা রুশ নিয়ন্ত্রিত লুহানস্ক এবং দনেৎস্ক এবং ক্রাইমিয়ার বাসিন্দা তারা আন্তরিকভাবে আমন্ত্রিত।"
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসির সাথে কথা বলা এক ভাড়াটে সেনা জানান, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত রাশিয়ার সামরিক গোয়েন্দা ইউনিট জিআরইউ-এর অফিসারদের অধীনে পরিচালিত ইউনিটে নতুনদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। তিনি জানান, নিয়োগের নীতিমালা পরিবর্তিত হয়েছে, এবং কম বিধিনিষেধ প্রয়োগ করা হয়েছে। কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করে ওই ভাড়াটে সেনা জানান, "তারা যে কাউকে, সবাইকে নিয়োগ করছে। এখানে নতুন যোদ্ধাদের পেশাদারিত্ব খুবই কম”। তিনি বলেন, নতুন ইউনিটগুলোকে আর ওয়্যাগনার হিসাবে উল্লেখ করা হয় না, তাদের নতুন নাম দেয়া হচ্ছে। যেমন- দ্য হকস।
গণমাধ্যমের সাথে কথা বলা ভাড়াটে সেনা জানান, রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে মোলকিনো এলাকার সেনা ঘাঁটির পাশে ওয়্যাগনারের ঘাঁটিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় নিয়োগপ্রাপ্তদের।
গোপন মেসেজিং গ্রুপগুলির পাশাপাশি, ভাড়াটে সেনা নিয়োগে রাশিয়ায় একটি প্রকাশ্য প্রচারণাও রয়েছে। তবে বরাবরের মত ভাড়াটে গোষ্ঠীগুলির সাথে সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে আসছে রাশিয়া। ভাড়াটে সেনাদের সাথে কথা বলার পর, এসব তথ্য সম্পর্কে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চাওয়া হলেও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি বলে জানায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
এসএন/জুআসা/২০২২