২০২৪ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নিজেরাই মহাকাশ স্টেশন গড়ে তুলবে বলে ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। এ ঘোষণায় হতাশা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত মঙ্গলবার রাশিয়া মহাকাশ গবেষণা সংস্থার প্রধান জানান, নিজস্ব স্পেস-স্টেশন তৈরিতে জোর দিয়েছে রাশিয়া। খবর রয়টার্সের।
ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার উপরে পৃথিবীর কক্ষপথে মহাকাশ স্টেশনের অবস্থান। বিশ্বের পাঁচটি মহাকাশ গবেষণা সংস্থার একটি যৌথ প্রকল্প এই স্টেশন, যা ১৯৯৮ সাল থেকে দিন-রাত পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে।
যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপান, কানাডা এবং ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার যৌথ উদ্যোগে হাজারো বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এই মহাকাশ স্টেশন ব্যবহার করা হচ্ছে। যার চুক্তির মেয়াদ ২০২৪ সাল পর্যন্ত। যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য দেশগুলো প্রকল্পের মেয়াদ বাড়াতে চাইলেও তাতে জোর আপত্তি জানিয়েছে রাশিয়া। মস্কোর স্পষ্ট ঘোষণা, আইএসএস থেকে সরে আসবে তারা।
রুশ মহাকাশ সংস্থার প্রধান ইউরি বোরিসভ বলেন, ‘২০২৪ সালেই আইএসএস ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। এই সময়ের মধ্যে নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন স্থাপনের কাজ শুরু করা হবে। নতুন এই স্টেশন তৈরির কাজকেই এখন আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি।’
আইএসএস দুটো ভাগে বিভক্ত। একটি রাশিয়ান অরবিটাল সেগমেন্ট এবং অপরটি ইউএস অরবিটাল সেগমেন্ট। রাশিয়ার অংশটি আমেরিকান অংশের বিদ্যুৎ ছাড়া কাজ চালাতে পারে না। আবার আমেরিকান অংশ রাশিয়ার অংশের চালিকাশক্তি ছাড়া কাজ করতে পারে না। ফলে এক পক্ষকে ছাড়া অন্য পক্ষ অসম্পূর্ণ। মস্কোর এ ধরনের সিদ্ধান্তে হতাশ হয়েছে ওয়াশিংটন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, মস্কোর এ ধরনের সিদ্ধান্ত খুবই দুঃখজনক। যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া দীর্ঘ সময় ধরে মহাকাশ গবেষণায় একসঙ্গে কাজ করে আসছে। ইউক্রেন ইস্যুতে সম্পর্কের এই ধারায় পরিবর্তন এসেছে। তবে আমরা মনে করি জননিরাপত্তা, বিজ্ঞান এবং গবেষণা ইস্যুতে একত্রে দুই দেশের কাজ করার সুযোগ আছে।
উল্লেখ্য, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই যৌথ মহাকাশ স্টেশন থেকে নিজেদের প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় রাশিয়া।