আ. লীগের নির্যাতনে সংখ্যালঘুরা ভারতে চলে যাচ্ছে : ফখরুল
প্রকাশিত:
২৫ মার্চ ২০২১ ২৩:১৪
আপডেট:
২৫ মার্চ ২০২১ ২৩:১৬
আওয়ামী লীগের শাসনামলে নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় সংখ্যালঘুরা ভারতে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
গত ২০ মার্চ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরীর নেতৃত্বে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরী, সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি কলিম উদ্দিন আহমেদ মিলন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নুরুল সম্প্রতি হামলা শিকার শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রাম পরিদর্শন করেন এবং প্রত্যক্ষদর্শী ও ক্ষতিগ্রস্তদের বক্তব্য লিপিবদ্ধ করে একটি প্রতিবেদন দলের কাছে জমা দেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে কেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার পরও কী কারণে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা ভারতে চলে যাচ্ছে? এটাই কারণ, এই সময়ে তাদের ওপর নির্যাতনের পরিমাণ আরও বেশি করে বেড়ে গেছে। লক্ষ্যই হচ্ছে এটা তাদের সম্পত্তি দখল করা, তাদের বিভিন্ন রকমের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করা এবং মালামাল লুট করা।
পাকিস্তান আমলে তৈরি শত্রু সম্পত্তি আইন সরকার বাতিল করছে না তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগে মুখে বলে যে, তারা হচ্ছে আপনারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে চান, সংখ্যালঘুদের স্বার্থ তারা রক্ষা করতে চান। কিন্তু এখন পর্যন্ত শত্রুর সম্পত্তি আইন তারা বাতিল করেনি, তাদের যে ন্যায্য অধিকারগুলো রয়েছে তা দেয়নি।
সুনামগঞ্জের শাল্লায় উপজেলায় নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার সাম্প্রতিক ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বছর দুয়েক আগে ঠাকুরগাঁওয়ে একজন প্রভাবশালী এমপি কয়েক‘শ জমি দখল করেছিলেন। সেটার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের মিছিল করেছে, মানববন্ধন করেছে কিন্তু কোনো সুরাহা বা সমাধান পায়নি। ফরিদপুরেও এরকম ঘটনা। এবারে দেখেন, শাল্লার ঘটনার নেতৃত্বে দিচ্ছে সবখানে এসছে যে, যুব লীগের নেতা। অথচ ওবায়দুল কাদের সাহেব বলছেন যে, এখানে বিএনপি নেতৃত্ব দিয়েছে। বিএনপির নাম গন্ধ নেই এখানে। অর্থাৎ এটা হচ্ছে যে, মানুষকে যে বিভ্রান্ত করা, মানুষকে ভুল বুঝানো, মানুষকে যে একটা ভুল রাস্তায় নিয়ে যাওয়া সেটাই তাদের লক্ষ্য।
আওয়ামী লীগ কখনোই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষের শক্তি ছিল না বা এ দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষে তারা কখনোই ছিল না। বরাবরই তারা যেমন সন্ত্রাসী কায়দায় ক্ষমতায় টিকে আছে, ঠিক একই সম্পত্তি দখল করেছে সেই কায়দায়।
সংবাদ সম্মেলনে শাল্লায় ঘটনা সরেজমিনে পরিদর্শন করে আসা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, সম্প্রতি শাল্লা উপজেলায় হিন্দু অধ্যুষিত নোয়াগাঁও গ্রামে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হিন্দুদের বাড়ি, মন্দিরে উপাসনালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট ও নারকীয় ধ্বংসযোগ্য চালানো হয়। আমরা সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগীদের বাড়িঘরে, উপাসনালয়ে অবর্ণনীয় ধ্বংস লীলা দেখতে পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্তরা ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় অকপটে বলেছেন, ঘটনার দিন মাইকে প্রচার করে ঘটনার সময় স্থানীয় যুবলীগ নেতা স্বাধীন মিয়ার নেতৃত্বে তার অনুসারী শত শত মানুষ ওই গ্রামে উপস্থিত হয়ে প্রায় ৬০-৭০টি বাড়িঘরের সমস্ত মালামাল ও আসবাবপত্র লুটপাট করতে থাকে, বাড়িঘরের জানালা, দরজা, বেড়া কুপিয়ে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে, নারী-পুরুষ ও শিশুদের মারধর করে। শিশু বাচ্চাদের নিয়ে বাথরুমে প্রাণ ভয়ে পালিয়ে থাকা নারীদের বের করে এনে লাঞ্ছিত করে। আওয়ামী যুবলীগের সন্ত্রাসী হারমাদ বাহিনী হিন্দুদের বাড়িঘর, মন্দির উপাসনালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।
গুলশানের সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ও নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
সম্পর্কিত বিষয়:
ফখরুল
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: