সোমবার, ৭ই এপ্রিল ২০২৫, ২৪শে চৈত্র ১৪৩১

Shomoy News

Sopno


‘ওয়াকফ বিলের মাধ্যমে ভারতে মুসলমানদের অধিকার খর্ব করা হয়েছে’


প্রকাশিত:
৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:০৭

আপডেট:
৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:১৬

ছবি সংগৃহীত

কয়েকদিন আগে ভারতের পার্লামেন্টে মুসলিম ওয়াকফ (সংশোধন) বিল ২০২৫ নামে একটি আইন পাস করা হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, এর বিভিন্ন ধারা বিশ্লেষণ করে আমরা (বিএনপি) দেখেছি যে, ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের অধিকার খর্ব করা এবং বৈষম্যমূলক আচরণের চেষ্টা করা হয়েছে।

রোববার (৬ এপ্রিল) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ভারতে মুসলমানরা এবং বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন এই বিলকে অসাংবিধানিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

ওয়াকফ হলো ইসলামি দানের একটি প্রাচীন ব্যবস্থা উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ওয়াকফের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি স্থায়ীভাবে সাধারণত জমির মতো কোনো সম্পত্তি ধর্মীয় বা জনহিতকর কাজে ব্যবহারের জন্য দান করেন। এ ধরনের ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রি করা বা কারো নামে হস্তান্তর করা যায় না।

তিনি বলেন, ভারতের জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ২০ কোটি মুসলমানদের ধর্মীয় ঐতিহ্য, অধিকার, সংস্কৃতি ও স্বার্থবিরোধী এই আইনকে অপব্যবহারের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে, যা ইসলামী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যাপক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। ভারতে ওয়াকফ বোর্ডগুলোর অধীনে প্রায় ১০ লাখ একর সম্পত্তির মধ্যে অধিকাংশই ব্যবহৃত হয় মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান ও এতিমখানার মতো জনকল্যাণমূলক কাজে। নতুন আইনে পরিচালনা বোর্ডে অমুসলিম সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। যার ফলে মুসলিম নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন হতে পারে।

মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকারে হস্তক্ষেপের কারণে এবং বৈষম্যমূলক আচরণের ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, এ রকম কোনো পদক্ষেপ রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে গ্রহণ করা সমীচীন নয় বলে আমরা মনে করি। ভারতে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের এই জাতীয় বোর্ডে অথবা কোনো আইনি সংগঠনে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের কোনো অন্তর্ভুক্তি দেখা যায় না। সেক্ষেত্রে এই আইনটি একটি বৈষম্যমূলক আইন হিসাবে বিবেচিত হবে।

নতুন আইনে পরিবর্তনগুলো শত শত বছর আগে প্রতিষ্ঠিত ওয়াকফ জমির ওপর গড়া মসজিদ এবং অন্যান্য ইসলামী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করে তুলতে পারে বলে মনে করেন বিএনপির এই নেতা। তার মতে, নতুন আইনে অমুসলিম সদস্যদের এই সম্পত্তিগুলোর ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনে যে এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে, তা মুসলিম নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকারে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল।

সালাহউদ্দিন আরো বলেন, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের মতো সংগঠনগুলোর মতে এই আইন ইসলামি ওয়াকফ ব্যবস্থার মূল চেতনার পরিপন্থি। তাদের মতে ওয়াকফ বোর্ডের পরিচালনা মুসলমানদের দ্বারাই হওয়া উচিত। তারা একে মুসলিম নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকারে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল বলে অভিমত দিয়েছেন।

ভারত একটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আশা প্রকাশ করেন যে, বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সব ধর্মাবলম্বী নগরিকদের ধর্মীয় অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রের অভিভাবকত্বের ভূমিকাকে সমুন্নত রেখে উক্ত আইনটি ভারত সরকার পুনর্বিবেচনা করবে।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top