পদ্মায় বালুবাহী বাল্কহেড ডুবি, ঝুঁকিতে চলছে ফেরিসহ অন্যান্য নৌযান
প্রকাশিত:
১৯ আগস্ট ২০২৫ ১৬:৩১
আপডেট:
১৯ আগস্ট ২০২৫ ১৬:৩২

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের অদূরে পদ্মা নদীর প্রবল স্রোতের মধ্যে পড়ে বালুবাহী একটি বড় বাল্কহেড ডুবে গেছে। এতে সুকানিসহ পাঁচজন অল্পের জন্য রক্ষা পান, তবে বাল্কহেডের পেছনের অংশ পানির ওপরে থাকায় ফেরিসহ নৌযান চলাচলে ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) নদীতে বাল্কহেডের পেছনের অংশ পানির ওপরে ভেসে থাকতে দেখা যায়। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় বাল্কহেডটি ডুবে গিয়েছিল। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (মেরিন) আবদুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি নিশ্চত করেছেন।
আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, সোমবার সন্ধ্যার দিকে দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ফেরিঘাট থেকে প্রায় এক কিলোমিটার ভাটিতে বাহিরচর এলাকায় বাল্কহেডটি ডুবতে থাকে। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআইডব্লিউটিএ) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাল্কহেডের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জেগে থাকায় ফেরিসহ নৌযান চলাচলে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ রাতেই ঘটনাস্থলে বয়া স্থাপন করেছে। ফেরিমাস্টারদেরও সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বালুর মালিক শহিদুল ইসলাম জানান, মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার রাহাতপুর থেকে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার ঘনফুট বালু বোঝাই করে ‘শেখ হাজী হান্নান’ নামের বাল্কহেডটি দৌলতদিয়া ঘাটের দিকে যাচ্ছিল। সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে প্রবল স্রোতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডুবোচরের সঙ্গে ধাক্কা খায় এবং ধীরে ধীরে ডুবতে শুরু করে। খবর পেয়ে ট্রলারযোগে সুকানিসহ পাঁচজনকে উদ্ধার করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ৭ নম্বর ফেরিঘাটের অদূরে বাহিরচরের ছাত্তার মেম্বারপাড়ার কাছে বাল্কহেডটির অনেকাংশ জেগে আছে। ফলে ফেরিসহ নৌযানগুলোকে বিকল্প পথে ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে।
সুকানি সেলিম মিয়া বলেন, ‘বাল্কহেডটির ধারণক্ষমতা ১৫ হাজার ঘনফুট। প্রবল স্রোতের কারণে ইঞ্জিনের শক্তি কুলাতে না পেরে ভাটির দিকে সরাতে থাকি। একপর্যায়ে ডুবোচরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে বাল্কহেডটি কাত হয়ে ডুবে যায়। দ্রুত উদ্ধার না হলে আমরা প্রাণ হারাতাম।’
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, নদীতে চলাচলকারী অনেক বাল্কহেডের নিবন্ধন ও ফিটনেস নেই। অদক্ষ সুকানিদের দিয়ে এসব বাল্কহেড চালানো হয়। আবার ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ বালু পরিবহন করায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।
দৌলতদিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক ত্রিনাথ সাহা বলেন, পদ্মায় চলাচলকারী বাল্কহেডের বিরুদ্ধে প্রতি মাসে ১০ থেকে ১২টি অভিযান চালানো হয়। বর্তমানে স্রোত তীব্র থাকায় তদারকি কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে বাল্কহেড ডোবার খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ডুবে যাওয়া বাল্কহেড দ্রুত অপসারণ বা স্থানান্তরের জন্য মালিককে বলা হয়েছে।
এসএন/রুপা
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: