কাকরাইল মোড়ে শুয়ে-বসে জবি শিক্ষার্থীরা, লিখিত আশ্বাস ছাড়া ফিরবেন না
প্রকাশিত:
১৫ মে ২০২৫ ১৩:১৫
আপডেট:
১৫ মে ২০২৫ ২০:৩৬

তিন দাবি আদায়ে রাতভর রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে অবস্থান করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। দ্বিতীয় দিনের মতো আজ বৃহস্পতিবারও (১৫ মে) তাদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে রাখায় কাকরাইল মোড়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে আশপাশের সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, আর পিছিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমাদের কোনো আবাসন নেই, আবাসন ভাতা দিচ্ছে না। রাস্তার ওপরই আমাদের একমাত্র আশ্রয়। এত বঞ্চনার পর খালি হাতে ফিরে যাওয়া অসম্ভব। পুলিশের লাঠিপেটা, জলকামান, টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড খেয়ে, রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে না খেয়ে পুরোদিন পার করেছি। লিখিত আশ্বাস ছাড়া ক্যাম্পাসে ফিরব না।
সরেজমিনে দেখা যায়, কেউ খালি গায়ে রাস্তায় শুয়ে আছেন। কেউ জামাকাপড় বিছিয়ে শুয়ে আছেন। কেউবা গাছের পাতা ও ডালপালা মেলে রাস্তায় শুয়ে পড়েছেন। কেউবা ক্লান্ত শরীর নিয়ে সহপাঠীর কাঁধে হেলান দিয়ে আছেন। কেউ আবার বসে আছেন কিংবা সহপাঠীদের সঙ্গে গল্পে সময় পার করছেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাস্তায় রাত কাটিয়েছেন কয়েকজন শিক্ষকও।
এদিকে সকাল হতেই পুরান ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে দলে দলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে যোগ দিতে কাকরাইলে ছুটে আসতে থাকেন। সবার কণ্ঠে একটাই কথা- ‘দাবি মানতেই হবে।’
রাতভর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সড়কে অবস্থান করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের শিক্ষক ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন এবং ব্যবসায় অনুষদের ডিন অধ্যাপক মঞ্জুর মোর্শেদ ভূঁইয়া। এছাড়া রাত আড়াইটা পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন ছাত্রকল্যাণ পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক কেএমএম রিফাত হাসান ও ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুমন কুমার মজুমদার। রাত দুইটা পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন প্রক্টর, সহকারী প্রক্টরসহ অনেক শিক্ষক।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে সড়কে অবস্থান নিয়েছে শাখা ছাত্রদল, ছাত্র শিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো-
১. আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০% শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করতে হবে।
২. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাঁটছাঁট না করেই অনুমোদন করতে হবে।
৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।
উল্লেখ্য, বুধবার (১৪ মে) দুপুর সাড়ে ১১টা থেকে তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’ অভিমুখে লংমার্চ নিয়ে এসে পুলিশের বাধায় কাকরাইল মসজিদের সামনে অবস্থান করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: