মঙ্গলবার, ৫ই আগস্ট ২০২৫, ২১শে শ্রাবণ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর গলা কেটে হত্যা, গ্রেফতার ৩


প্রকাশিত:
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২২:২০

আপডেট:
৫ আগস্ট ২০২৫ ২১:১৯

 ছবি : সংগৃহীত

নোয়াখালীতে স্কুলছাত্রীর গলাকাটা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে হত্যাকান্ডের ঘটনায় তারা জড়িত বলে ধারণা করছে পুলিশ। নিহত স্কুলছাত্রীর নাম তাসনিয়া হোসেন অদিতি।
সে নোয়াখালী সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- ইসরাফিল (১৪), তার ভাই সাঈদ (২০) ও আবদুর রহিম রনি (৩০)। তার মধ্যে রনির মাথা, ঘাড়, গলাসহ শরীরের একাধিক স্থানে নখের আঁচড় রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত একটি ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে নিজ বাড়ি থেকে ওই স্কুলছাত্রীর (১৪) গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোঃ শহীদুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নোয়াখালী শহরের লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার স্কুলছাত্রী তাসনিয়া হোসেন অদিতা হত্যাকান্ডের ঘটনায় আবদুর রহিম রনি নামের তার সাবেক কোচিং শিক্ষকসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার রনি লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার খলিল মিয়ার ছেলে। তার মাথা, ঘাড়, গলাসহ শরীরের একাধিক স্থানে নখের আঁচড় রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত একটি ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, রনির কোচিং থেকে কিছুদিন আগে পড়া বন্ধ করে দিয়ে অন্য স্থানে প্রাইভেট শুরু করে অদিতা। এতে ক্ষিপ্ত হয় রনি, যদিও পরে অদিতাদের বাসায় বিভিন্ন সময় আসা-যাওয়া করত সে। অদিতার মা ঘরে না থাকার সুযোগে বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে ২টার মধ্যে কোন একসময় বাসায় গিয়ে অদিতাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ ও পরে ঘটনা ধামাচাপা দিতে ঘরে থাকা ছোরা দিয়ে হাত ও গলা কেটে তাকে হত্যা করে। ঘটনা ভিন্ন খাতে নেয়ার জন্য ঘরে আলমারিতে থাকা মালামাল ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখে। কিন্তু কোন মূল্যবান জিনিস খোয়া যায়নি। এর আগে বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে জাহান মঞ্জিলের একটি কক্ষ থেকে অদিতার মৃতদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। । মৃতদেহটি অর্ধনগ্ন, গলা ও দুই হাতের রগ কাটা অবস্থায় বিছানায় পড়ে ছিল।

শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মেয়ের শোকে শয্যাশায়ী মায়ের কান্না কিছুতেই থামছে না। প্রতিবেশীরা তাকে সান্তনা দেয়ার চেষ্টা করছেন। বিলাপ করে ছাত্রীর মা বলেছিলেন- ‘আমার কী অপরাধ! তারা কেন আমার মেয়েকে এভাবে নৃশংসভাবে মেরে ফেলল। আমার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার ব্যাপারে এই এলাকার সবাইকে বলেছি, কেউ আমার কথা শোনেননি। কেউ উত্ত্যক্তকারীদের বিচার করেননি। তারা যদি সময়মতো বিচার করতেন, তা হলে আজ আমার মেয়েকে এভাবে অকালে জীবন দিতে হতো না। আমি আমার মেয়েকে ছাড়া কীভাবে বাঁচব! কী নিয়ে থাকব!’

নিহত স্কুলছাত্রীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে বাসায় রেখে নিজ কর্মস্থলে যান ওই নারী। সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে দেখেন দরজায় তালা ঝুলছে। পরে নিজের কাছে থাকা চাবি দিয়ে দরজা খুলতেই দেখেন, কক্ষের ভেতর জিনিসপত্র এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে। এ সময় ভেতরের একটি কক্ষের দরজা বন্ধ দেখতে পান। পরে বাইরে গিয়ে জানালা দিয়ে দেখেন কক্ষের ভেতর তার মেয়ের গলাকাটা লাশ পড়ে আছে। পরে দরজা ভেঙ্গে ছাত্রীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে রাত সাড়ে আটটার দিকে সুধারাম থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।

জেলা শহর মাইজদীতে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের পর গলাকেটে হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত প্রাইভেট শিক্ষককে তিনদিনের রিমান্ড এবং অন্য তিন আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।

শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নোয়াখালী মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে প্রধান অভিযুক্ত আবদুর রহিম রনির দশদিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। আদালতের জেষ্ঠ্য বিচারক রনির তিনদিনের রিমান্ড ও অন্য আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।


সম্পর্কিত বিষয়:

স্কুলছাত্রী

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top