ভবঘুরে গনি মিয়ার কাছে লুকানো ছিল সাড়ে ৩ লাখ টাকার বেশি!
প্রকাশিত:
১৫ জুন ২০২৫ ১৩:১২
আপডেট:
১৬ জুন ২০২৫ ০৫:১১

গায়ে নোংরা পোশাক আর কাঁধে বড় বড় গাট্টি (বস্তা) নিয়ে চলাফেরা করেন। নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর শহরের আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়ান গনি মিয়া। দেখে বোঝা যায় দীর্ঘদিন গোসল করেন না তিনি। একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগ গোসল করাতে গিয়ে তার কাছে মিলেছে লাখ লাখ টাকা ও দলিল দস্তাবেজ।
শনিবার (১৪ জুন) ওই ব্যক্তিকে গোসল করানোর উদ্যোগ নেন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করা হিউম্যানিটি বাংলাদেশ নামে একটি সেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন। তাকে ধরে গায়ের পোশাক খুলতে চাইলে এ সময় তার শার্টের হাতা ও কলার ও পোশাকের বিভিন্ন জায়গায় মোড়ানো অবস্থায় অনেক টাকা পাওয়া যায়। আবার বড় বড় বস্তা থেকে বিপুল পরিমাণ ১ হাজার, ৫০০ ও ১০০ টাকার নোট পাওয়া যায়। এ ছাড়া তার কাছে থাকা বস্তায় জমির একাধিক দলিল দস্তাবেজও পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করা হিউম্যানিটি বাংলাদেশ সেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন শনিবার সকাল থেকে সৈয়দপুর শহরের ৪ জন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের গোসল করিয়ে নতুন কাপড় পড়িয়ে দেন। পরে সৈয়দপুর রেলওয়ে মাঠে গনি মিয়ার সন্ধান পেয়ে তাকে বুঝিয়ে গোসল করাতে রাজি করান। এ সময় গোসল করানোর জন্য তার গায়ের পোশাক খুলতে গেলে তার শার্টের হাতা, কলার ও পোশাকের বিভিন্ন জায়গায় মোড়ানো অবস্থায় অনেক টাকা পাওয়া যায়।
আবার বড় বড় বস্তা থেকে বিপুল পরিমাণ এক হাজার, পাঁচশত ও একশত টাকার নোট পাওয়া যায়। টাকা দেখতে উৎসুক জনতার ভিড় বাড়তে থাকলে সংগঠনটির সেচ্ছাসেবক ময়নুল ইসলাম জরুরি সেবা ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিয়ে সৈয়দপুর থানা পুলিশের সহযোগিতায় টাকাসহ ওই ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে যান। সেখানে থানা পুলিশ ও উপজেলা সমাজসেবা দফতরের কর্মকর্তার উপস্থিতিতে টাকা গণনা করা হয়। এতে দেখা যায় তার কাছে ছিল তিন লাখ ৬৯ হাজার ৫২ টাকা। টাকাগুলো বর্তমানে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয়ের সমাজকর্মী রশিদুল ইসলামের কাছে গচ্ছিত রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, শহরে ভবঘুরের মতো ঘুরে বেড়ান গনি মিয়া। তাকে অনেকেই টাকা দিয়ে সহায়তা করেন। সেই টাকাই খরচ না করে তিনি বস্তা বা শার্টের বিভিন্ন জায়গায় গুঁজে রাখেন। তিনি খুব ভালো মানুষ, কারও ক্ষতি বা কাউকে বিরক্ত করেন না।
সৈয়দপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফইম উদ্দীন বলেন, ওই লোকটি মূলত শহরের জিআরপি এলাকায় বেশিরভাগ সময় থাকেন। তিনি জানিয়েছেন তার বাড়ি রংপুরের আলমনগরের রবার্টসনগঞ্জ এলাকায়। তার পরিবারের লোকজনকে খোঁজা হচ্ছে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: