সরকারি জায়গা ভরাট করে দখলের অভিযোগ
প্রকাশিত:
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:২৭
আপডেট:
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:০৯

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে নদীর জায়গা ও সরকারি খাস জমিতে আল-মোস্তফা কোম্পানির পক্ষে বালু ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের আষাঢ়িয়ার চর এলাকায় মেঘনা নদীর শাখা মারীখালি রাতের আঁধারে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু ফেলে এ জমিগুলো দখল করেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রউফ ও তার ছোট ভাই, পিরোজপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল জলিল এ কাজ করছেন। তবে বিএনপি নেতার দাবি, তারা নিজের ও আল-মোস্তফা কোম্পানির কেনা জমিতে বালু ভরাট করেছেন। সেখানে কোনো নদীর জায়গা নেই।
এলাকাবাসীর দাবি, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের আষাঢ়িয়ার চর এলাকায় মেঘনা নদীর শাখা মারীখালি নদীতে রাতের আঁধারে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু ফেলে জমিগুলো দখল করা হচ্ছে। এতে নদীতে নৌযান চলাচল সীমিত হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে এই নদী এলাকায় কয়েক হাজার মানুষ গোসল, রান্নার পানি নেওয়া এবং মাছ ধরার জন্য নদী ব্যবহার করত। বালু ভরাটের ফলে তাদের জীবিকা ও নদীর ব্যবহার ব্যাহত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আষাঢ়িয়ার চর ব্রিজের পূর্ব পাশে শাখা নদীতে বিস্তৃত এলাকাজুড়ে বালু ভরাট করা হয়েছে। নদীর মধ্যভাগে বাঁশের খুঁটি ও বেড়া দিয়ে বালু ভরাট করা হচ্ছে। স্থানীয়রা বলেন, ভয়ভীতি কারণে কেউ অভিযোগ করতে সাহস পাচ্ছে না। তবে বালু ভরাট কাজে নিয়োজিত এক শ্রমিক জানিয়েছেন, এটি আব্দুর রউফ ও জলিলের তত্ত্বাবধানে আল-মোস্তফা কোম্পানির জন্য করা হচ্ছে।
আষাঢ়িয়ার চর গ্রামের মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, এ কাজ প্রতিদিন রাতে করা হচ্ছে, দিনের বেলায় কিছু হচ্ছে না।
অভিযুক্ত সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রউফ বলেন, এখানে কোনো নদীর জায়গা নেই। আমাদের ব্যক্তিগত ও কোম্পানির কেনা জমিতে বালু ভরাট করা হয়েছে। নদী আরও এক প্লট দূরে রয়েছে।
কোম্পানির চেয়ারম্যান আল-মোস্তফা বলেন, এলাকাবাসীও কিছু জায়গা ভরাট করছে। আমাদের কোম্পানির কিছু জমি রয়েছে, যা ভরাট করা হচ্ছে। নদীর খাল আমাদের জমি থেকে আড়াইশ’ ফুট দূরে। বর্ষাকালে সব জায়গায় খাল দেখা যায়। আমরা ভরাট কাজ বর্তমানে বন্ধ করেছি।
হোসেনপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান জানান, স্থানীয়ভাবে বালু ভরাটের প্রমাণ পাওয়া গেছে। দখলদারদের তাদের কাগজপত্র নিয়ে এসিল্যান্ড কার্যালয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তৌফিকুর রহমান বলেন, সরকারি খাস জমি ও নদীর জায়গা কাউকে দখল করতে দেওয়া হবে না। দখলের প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিআইডব্লিউটিএ মেঘনা ঘাট নদী বন্দরের উপ-পরিচালক মো. রেজাউল করিম বলেন, শাখা নদীর বিষয়টি সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেখভাল করবেন। কেউ নদীর জায়গা দখল করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: