শনিবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৫, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


মিয়ানমারে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী শহর থেকে শত শত সেনাসহ জেনারেল আটক


প্রকাশিত:
১২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১১:১২

আপডেট:
২৬ এপ্রিল ২০২৫ ১২:১২

ফাইল ছবি

মিয়ানমারের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মংডু শহর দখলে নেওয়ার দাবি আগেই করেছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। এবার তারা সরকারি বাহিনীর শত শত সৈন্যকে আটকের কথা জানিয়েছে।

আটককৃতদের মধ্যে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কুখ্যাত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনও রয়েছেন বলে জানিয়েছে আরাকান আর্মি। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী।

আরাকান আর্মি (এএ) বুধবার ঘোষণা করেছে, তারা বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাখাইন প্রদেশের মংডু শহরের শেষ জান্তা ঘাঁটিটি গত রোববার দখলে নিয়েছে এবং এসময় কুখ্যাত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনসহ শত শত সরকারি সেনাকে বন্দি করেছে।

এদিকে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মংডু শহর দখলে নেওয়ার ফলে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের প্রায় পৌনে তিনশ কিলোমিটার সীমান্তের পুরোটাই আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির সশস্ত্র এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি জান্তার শেষ অবশিষ্ট সীমান্ত ঘাঁটি মংডু শহরের বাইরে অবস্থিত বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নং ৫ বেশ কয়েক মাস লড়াইয়ের পর রোববার সকালে দখল করে নেয়।

ব্যাপক সুরক্ষিত এই ঘাঁটিটি আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ), আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও)-এর রোহিঙ্গা মিলিশিয়াসহ ৭ শতাধিক পুলিশ অফিসার এবং সৈন্যদের মাধ্যমে পরিচালিত হতো।

আরাকান আর্মি বলেছে, তারা জান্তা বাহিনীর বিমান হামলার মধ্যে ৫৫ দিনের লড়াইয়ের পরে রোববার এই ঘাঁটি দখল করতে সক্ষম হয়। তারা আরও বলেছে, বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে লড়াইয়ের সময় ৪৫০ জনেরও বেশি সরকারি সৈন্য নিহত হয়েছে এবং আরাকান আর্মির সৈন্যরা প্রচুর অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করেছে।

আরাকান আর্মির হাতে ঘাঁটিটির পতনের পর সরকারি সেনাসহ অন্যরা পালিয়ে যায়। তবে ঘাঁটি থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর প্রায় ৮০ জন রোহিঙ্গা বিদ্রোহীসহ সরকারি সৈন্যদের সাথে জান্তার মিলিটারি অপারেশন কমান্ড (এমওসি) ১৫ এর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনকে গ্রেপ্তার করে আরাকান আর্মি।

ঘাঁটিটি দখল হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে ভেতরে আটকে থাকা জান্তা সৈন্যরা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করেছিল যাতে তারা তাদের সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য জান্তা নেতার কাছে আবেদন করে। ভিডিওতে সরকারি সৈন্যদের বলতে শোনা যায়, তারা তিন মাস ধরে ঘাঁটিতে আটকে আছে। কিন্তু এরপরও নেতারা তাদের সরিয়ে নেওয়ার কোনও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেননি এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুন তাদের পরিত্যাগ করেছিলেন।

ইরাবতী বলছে, ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পরে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালেতে শান্তিপূর্ণ অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভের ওপর প্রাণঘাতী ক্র্যাকডাউন চালানোর জন্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুন কুখ্যাত। এছাড়া এই জেনারেল রাখাইন প্রদেশের উত্তরে জান্তার পক্ষে লড়াই করার জন্য রোহিঙ্গাদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র দেওয়ার অভিযোগেও অভিযুক্ত।

২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পরে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী থেকে বের হয়ে আসা সাবেক সেনা ক্যাপ্টেন জিন ইয়াও দ্য ইরাবকীকে বলেন, বন্দি কুখ্যাত এই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তার ঊর্ধ্বতনদের প্রতি অটল আনুগত্য দেখানোর জন্য এবং তার কমান্ডের অধীনে থাকা সৈন্যদের প্রতি নির্দয় আচরণের জন্য পরিচিত ছিলেন।

জিন ইয়াও আরও বলেন, “বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের জন্য যুদ্ধের সময় তিনি তার দেহরক্ষীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন যে— কোনও জান্তা সৈন্য যদি পালাতে বা আরাকান আর্মির কাছে আত্মসমর্পণের চেষ্টা করে তাহলে তাকে গুলি করতে হবে। তবে তিনি তার ঊর্ধ্বতনদের কাছে সত্যিকারের পরিস্থিতি জানাতে ব্যর্থ হন, বিশেষ করে আহত সৈন্যদের অবস্থার বিষয়ে।”

আরাকান আর্মি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনসহ বন্দি জান্তা সৈন্যদের ছবি প্রকাশ করেছে। সেইসাথে ঘাঁটি থেকে জব্দ করা অস্ত্র ও গোলাবারুদের একটি বড় সংগ্রহের ছবিও প্রকাশ করেছে তারা।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top