শনিবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৫, ১২ই বৈশাখ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


পাকিস্তান-আফগানিস্তান

দিনে সম্পর্কোন্নয়নের জন্য বৈঠক, রাতে হামলা


প্রকাশিত:
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১১:০৩

আপডেট:
২৬ এপ্রিল ২০২৫ ০৩:৫৩

ফাইল ছবি

আফগানিস্তানে বিমান হামলা চালানোর কয়েক ঘণ্টা আগে দেশটির সরকারি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছিল পাকিস্তানের একটি প্রতিনিধি দল। বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যকার বিভেদগুলো দূর করা এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন।

আফগানিস্তানে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত এবং দেশটির আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি মোহাম্মদ সাদিক এ তথ্য জানিয়েছেন। মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি ছবি পোস্ট করেছেন তিনি। সেখানে দেখা যাচ্ছে, আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে বৈঠক করছেন মোহাম্মদ সাদিকের নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধি দল।

ছবিটির সঙ্গে সংযুক্ত বার্তায় মোহাম্মদ সাদিক বলেন, “আমরা আজ (আফগানিস্তানের) পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে বৈঠক করেছি। বিভিন্ন ইস্যুতে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা হয়েছে আমাদের। বৈঠকে আমরা দুই দেশের সম্পর্কোন্নয়ন ও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই অঞ্চলকে শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতে পথে নিয়ে যেতে ঐকমত্যে পৌঁছেছি।

আগের দিন আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজউদ্দিন হাক্কানির সঙ্গেও বৈঠক করেছেন মোহাম্মদ সাদিক। সে তথ্যও এক্সবার্তায় উল্লেখ করেছেন তিনি।

মোহাম্মদ সাদিক এবং আমির খান মুত্তাকির বৈঠকের ১২ ঘণ্টার মধ্যেই আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ পাকতিকায় ব্যাপক বিমান হামলা পরিচালনা করে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাহিনী।

প্রদেশের বারমাল জেলার লামানসহ ৭টি গ্রামকে লক্ষ্য করে চালানো এ হামলায় মুর্গ বাজার নামের একটি গ্রাম সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যম খামা নিউজ। বাকি গ্রামগুলোরেও উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এনায়েতুল্লাহ খারাজমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় জানিয়েছেন, পাকিস্তানের বিমান হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে কয়েকজন শিশুও রয়েছে।

এক্সবার্তায় এনায়েতুল্লাহ আরও বলেন, নিহতরা সবাই বেসামরিক এবং পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের ওয়াজিরিস্তান থেকে শরণার্থী হিসেবে এসেছিলেন এবং আফগান সরকার তাদেরকে বসবাসের অনুমতি দিয়েছিল।

দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে টানাপোড়েনের মূল কারণ আফগান তালেবানগোষ্ঠীর পাকিস্তান শাখা তেহরিক-ই তালেবান (টিটিপি)। সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গি তৎপরতার কারণে কয়েক বছর আগে টিটিপিকে নিষিদ্ধ করেছে পাকিস্তানের সরকার। দেশটির উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ায় টিটিপি বেশ সক্রিয়। এই প্রদেশটির সঙ্গে আফগানিস্তানের সীমান্ত রয়েছে।

আফগানিস্তানের তালেবানগোষ্ঠী টিটিপিকে নিয়মিত বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছে বলে বেশ কয়েক বার অভিযোগ করেছে ইসলামাবাদ, তবে কাবুল সে অভিযোগ বরাবর প্রত্যাখ্যান করেছে।

২০২১ সালে আফগান তালেবানগোষ্ঠী কাবুল দখল করার পর খাইবার পাখতুনখোয়ায় টিটিপির সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পায়। এই গোষ্ঠীটিকে নির্মূল করতে সেখানে নিয়মিত অভিযান শুরু করে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। অভিযান থেকে বাঁচতে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আফগানিস্তানে আশ্রয় নেওয়া শুরু করেন পাকিস্তানের অনেক নাগরিক। আফগানিস্তানও তাদের প্রায় নাগরিকের মর্যাদা দিয়ে গ্রহণ করে।

পাকিস্তানের অভিযোগ— কাবুলে ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার আফগানিস্তানকে টিটিপি ও তার সমমনা গোষ্ঠীগুলোর ‘নিরাপদ স্বর্গরাজ্যে’ পরিণত করেছে। টিটিপিকে দমনের জন্য কাবুলকে যৌথ অভিযান পরিচালনার প্রস্তাবও দিয়েছে ইসলামাবাদ।

এদিকে তালেবান সরকার টিটিপির সঙ্গে সম্পর্ক থাকার তথ্য পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করলেও যৌথ অভিযানের প্রস্তাবে অনীহা জানিয়েছে।

সূত্র : ডন, খামা নিউজ


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top