মঙ্গলবার, ৫ই আগস্ট ২০২৫, ২১শে শ্রাবণ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি মানবে না রাশিয়া, হুঁশিয়ারি মেদভেদেভের


প্রকাশিত:
৫ আগস্ট ২০২৫ ১১:৪৩

আপডেট:
৫ আগস্ট ২০২৫ ১৪:২২

ছবি ‍সংগৃহিত

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের নিষেধাজ্ঞা আর মানবে না রাশিয়া। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া এই ঘোষণা ঘিরে সাবেক প্রেসিডেন্ট ও নিরাপত্তা পরিষদের উপ-প্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, ন্যাটোর ‘রাশিয়াবিরোধী নীতির’ জবাবে মস্কো আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।

সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) দেওয়া পোস্টে মেদভেদেভ লেখেন, 'পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর রাশিয়াবিরোধী নীতিরই ফল। এটি এক নতুন বাস্তবতা, যা আমাদের প্রতিপক্ষদের মাথায় রাখা উচিত। অপেক্ষা করুন, আরও পদক্ষেপ আসছে।'

মেদভেদেভ এর আগেও রাশিয়ার পারমাণবিক সক্ষমতা নিয়ে একাধিকবার কড়া বক্তব্য দিয়েছেন। তবে এবার ‘আরও পদক্ষেপ’ বলতে কী বোঝাচ্ছেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।

রাশিয়ার এই ঘোষণার আগে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, মেদভেদেভের যুদ্ধবিষয়ক মন্তব্যের পর তিনি দুটি মার্কিন পারমাণবিক সাবমেরিনকে ‘উপযুক্ত অঞ্চলে’ মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন। এই পাল্টা পদক্ষেপ দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইউরোপ ও এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমি থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য মাঝারি ও স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের সম্ভাবনার কারণে মস্কো বাধ্য হয়েছে তাদের অবস্থান পুনর্মূল্যায়ন করতে।

বিবৃতিতে বলা হয়, 'এই অঞ্চলে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের বাস্তব সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ফলে এই শ্রেণির অস্ত্রের ওপর একতরফা নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার আর কোনও যৌক্তিকতা নেই।'

গত বছরই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্রের উসকানিমূলক পদক্ষেপের কারণে রাশিয়াকে হয়তো নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হতে পারে।

রিয়া নভোস্তিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লাভরভ বলেছিলেন, 'এই নিষেধাজ্ঞা এখন আর টেকসই নয়। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে এমন অস্ত্র মোতায়েন করছে, তাতে করে আমাদের আর নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখার যৌক্তিকতা নেই।'

রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার আইএনএফ (ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস) চুক্তি ১৯৮৭ সালে স্বাক্ষরিত হয়েছিল। সাবেক সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান এই চুক্তির মাধ্যমে ৫০০ থেকে ৫ হাজার ৫০০ কিলোমিটার পাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসে একমত হয়েছিলেন।

কিন্তু ২০১৯ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে সরে যায়। তারা অভিযোগ তোলে, রাশিয়া চুক্তি লঙ্ঘন করছে। যদিও মস্কো পাল্টা দাবি করেছিল, যুক্তরাষ্ট্র যদি এমন অস্ত্র মোতায়েন না করে, তাহলে তারাও করবে না।

এদিকে সোমবার ট্রাম্পের সাবমেরিন মোতায়েন সংক্রান্ত মন্তব্যের বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় রুশ প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, 'আমরা মনে করি পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে জনসমক্ষে কথাবার্তায় সবাইকে সতর্ক থাকা উচিত।'

এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এমন সময় তৈরি হয়েছে, যখন ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি না হলে রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা এবং দেশটির তেল ক্রেতা—যেমন ভারত ও চীনের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top