রবিবার, ২৪শে আগস্ট ২০২৫, ৯ই ভাদ্র ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাত

যুক্তরাষ্ট্রের ‘দাদাগিরির’ সামনে বন্ধু হয়ে উঠতে পারবে ভারত ও চীন?


প্রকাশিত:
২৪ আগস্ট ২০২৫ ১০:৩০

আপডেট:
২৪ আগস্ট ২০২৫ ১৭:১৯

ছবি ‍সংগৃহিত

বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানাপোড়েনের আবহে ভারতের পাশে থাকার ‘আশ্বাস’ দিয়েছে চীন। ভারতে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত শু ফেইহং জানিয়েছেন, দিল্লির ওপর ওয়াশিংটনের চড়া শুল্ক আরোপের ‘কড়া বিরোধিতা’ করছে বেইজিং।

যুক্তরাষ্ট্রের আচরণকে ‘দাদাগিরির’ আখ্যাও দিয়েছেন তিনি।

দিন কয়েক আগেই চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ভারত সফরে এসেছিলেন। সেই সময় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে মজবুত করা, সীমান্ত নিরাপত্তা এবং বাণিজ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।

শুধু তাই নয়, দিল্লি-বেইজিং সম্পর্ককে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ওপর জোর দিয়েছে দুই দেশই। শিগগিরই সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন বা এসসিও-র শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে চীনে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

ভারত-চীনের সম্পর্কের এই মোড় নিয়ে যেমন আলোচনা হচ্ছে, আবার এই প্রশ্নও উঠেছে যে– বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল ও প্রতিবেশী দুই দেশ, যাদের মধ্যে নানা ইস্যুতে বিবাদ-বৈরিতার ইতিহাসও আছে, তারা কি সত্যিই বন্ধু হয়ে উঠতে পারবে?

ভারতের পাশে থাকার বার্তা
রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার কারণে ভারতের ওপর অতিরিক্ত বাণিজ্য শুল্ক চাপানোর হুমকি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দিল্লিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সেই প্রসঙ্গ টেনে চীনের রাষ্ট্রদূত শু ফেইহং যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি নিশানা করেছেন।

তিনি বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে মুক্ত বাণিজ্য থেকে ব্যাপক উপকৃত হয়েছে। কিন্তু এখন বিভিন্ন দেশ থেকে অতিরিক্ত দাম আদায় করার জন্য দর কষাকষির মাধ্যম হিসেবে তারা শুল্ককে ব্যবহার করছে। যুক্তরাষ্ট্র ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে, এমনকি তা আরও বাড়ানোর হুমকিও দিয়েছে, চীন কঠোরভাবে এর বিরোধিতা করে। এই জাতীয় কর্মকাণ্ডের সামনে চুপ করে থাকলে যারা দাদাগিরি চালায় তারা সাহস পায়। বিশ্ব বাণিজ্যের সঙ্গে বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে সমুন্নত রাখতে চীন দৃঢ়ভাবে ভারতের পাশে থাকবে।”

এর আগে একই সুর শোনা গিয়েছিল চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কণ্ঠেও। ভারত সফরকালে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের বিষয়ে ইঙ্গিত করে তিনি বলেছিলেন, “একতরফা তর্জন-গর্জন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং মুক্ত বাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে।”

দ্বিতীয় দফায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একাধিক ইস্যু নিয়ে ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের দিকে নজর রয়েছে বিশ্বের।

প্রসঙ্গত, বাণিজ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-চীন লড়াই সম্প্রতি তুঙ্গে পৌঁছে যায় যখন ট্রাম্প প্রশাসন চীনের ওপর শুল্ক দিলে তারাও পাল্টা ব্যবস্থা নেয় এবং দুই দেশেরই পারস্পরিক শুল্ক তিন অঙ্কের ওপরে চলে যায়।

পরে দুই পক্ষই আলোচনায় রাজি হয় এবং আগামী নভেম্বর পর্যন্ত সেই আলোচনা চলবে বলে হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

ভারত- চীন সম্পর্ক কোন পথে?
‘মানব রচনা ইনস্টিটিউট অক রিসার্চ অ্যান্ড স্টাডিজ’-এর অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর উপমন্যু বসুর কথায়, “চীনের মন্তব্যে ট্রাম্প সম্পর্কে বেইজিংয়ের মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র যে বাণিজ্য শুল্ককে কিছু দেশের ক্ষেত্রে দরকষাকষির মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে সে বিষয়ে তারা সরব। দিল্লিও যে এটা বোঝে না, তা নয়। আসলে ভারত বিষয়টাকে দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে পরিচালনা করতে চায়।”

তিনি আরও বলেন, “চীন ও ভারত কিন্তু কিছু বিষয়ে সহমত। যেমন বৈশ্বিক স্তরে গ্লোবাল সাউথ সেইভাবে প্রতিনিধিত্ব পায় না- এই প্রসঙ্গে দুই দেশ একমত পোষণ করে। কিন্তু কিছু মৌলিক পার্থক্যও রয়েছে। তার মধ্যে একটা হলো চীনের (ভৌগোলিক) সম্প্রসারণের প্রবণতা।”

‘জিন্দল স্কুল অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স’ -এর অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর এবং ফরেন পলিসি বিশেষজ্ঞ গীতাঞ্জলি সিনহা রায় আবার বলেছেন, “ভারত এবং চীন বরাবরই কনফ্লিক্ট অ্যান্ড কো-অপারেশনের সম্পর্ক রেখে এসেছে। নিজ নিজ স্বার্থের কথা ভেবে দুই দেশই আলাপ-আলোচনায় বসেছে, সম্পর্ক ভালো করতে চেয়েছে।”

মার্কিন শুল্ক হুমকির কারণেই যে দুই দেশ কাছে আসছে এমনটা নয় বলে মনে করেন এই দুই বিশেষজ্ঞই।

উপমন্যু বসু বলেছেন, “ট্রাম্পের শুল্ক হুমকির কারণে ভারত-চীনের সম্পর্ক ভালো হতে চলেছে এমনটা ভাবা বোধহয় ওভার স্ট্রেচড (অত্যধিক দাবি করা) হয়ে যাবে। কারণ, দুই দেশের সমস্যার মূলে রয়েছে সীমান্ত সংক্রান্ত বিবাদ। গালওয়ানের সংঘাতের পর তো বিষয়টা আরও জটিল হয়।”

তিনি আরও বলেন, “সাম্প্রতিক অতীতে যে সমস্ত এলাকা নিয়ে বিরোধিতা নেই, সেখানে সীমানা নির্ধারণ নিয়েও কথা হয়েছিল কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। স্থায়ী সীমানা নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত দুই দেশের সমস্যা মেটার নয়।”

একই মত প্রকাশ করেছেন গীতাঞ্জলি সিনহা রায়। তার কথায়, “ট্রাম্পের কারণে দুই দেশ কাছে আসছে বলে মনে হয় না। ভূ-রাজনীতিতে সাদা বা কালো বলে কিছু হয় না, এখানে বিভিন্ন ফ্যাক্টর কাজ করে।”

তার ভাষায়, “তাছাড়া ভারত-চীন গত কয়েক বছর ধরে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত বিবাদসহ অন্যান্য ইস্যুর সমাধান খুঁজেছে। সামরিক স্তরে বৈঠক হয়েছে, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসেছেন, এবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী যাবেন চীনে। সব কিছু ধাপে ধাপে হয়েছে। ট্রাম্পের কারণে রাতারাতি হয়নি।”

স্থিতিশীলতা আসবে?
দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে স্থিতিশীলতা রক্ষার বিষয়ে জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

‘সাউথ এশিয়ান পলিটিক্স অ্যান্ড কনফ্লিক্ট স্টাডিজ’-এর গবেষক উপমন্য বসু বলেছেন, “ভারত-চীনের মধ্যে স্থিতিশীলতা সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার পক্ষে হিতকর। কিন্তু আসন্ন বৈঠকে ভারত ও চীনের মধ্যে সীমান্তসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কী আলোচনা হয়, কে কতটা নেগোশিয়েট করে এবং বিষয়গুলোর আরও রাজনীতিকরণ হবে কি না তার ওপর নির্ভর করছে পুরো ব্যাপারটা।”

গীতাঞ্জলি সিনহা রায়ও ধারণা প্রকাশ করে বলেন, “প্রতিবেশী হিসেবে ভারত-চীনের সম্পর্ক ভালো হওয়া উচিত। কিন্তু চীনকে ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং সীমান্তকে সম্মান জানাতে হবে। এই বিষয়গুলো সবসময় ভারতের মাথায় থাকবে। সবার আগে সীমান্তের বিষয়ে সমাধান দরকার। কিন্তু তারপরেও বিবাদিত এলাকা নিয়ে চীন চুপ করে বসে থাকবে বলে মনে হয় না।”

দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা ও ‘বিশ্বাস’
চীন ভারতের সাম্প্রতিক আলোচনায় দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনায় অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য বিষয়, তীর্থযাত্রা, নদী বিষয়ক তথ্য ভাগ করে নেওয়া, সীমান্ত বাণিজ্য ইত্যাদি নিয়ে কথা হয়েছে। সার, বিরল মাটি ও টানেল বোরিং মেশিন নিয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে চীন।

প্রসঙ্গত, সরকারি তথ্য অনুযায়ী দুই দেশের মধ্যে ২০২৪-২৫ সালে ১২৭.৭ বিলিয়ন ডলারের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য হয়েছে।

এই প্রসঙ্গে উপমন্যু বসু বলেছেন, “সংঘাতের আবহেও কিন্তু বাণিজ্যের দিক থেকে ভারত বা চীন কেউ কাউকে উপেক্ষা করেনি। সম্প্রতি রেয়ার আর্থ (বিরল খনিজ), মেশিনারি ইত্যাদি নিয়ে কথা হয়েছে। কাজেই বাণিজ্যের দিক থেকে সম্পর্ক ভালো। কিন্তু ভূ-রাজনীতির কথা মাথায় রাখলে বিশ্বাসের অভাব বিষয়টা সব সময় রয়েছে। চীনের তরফে সাম্প্রতি বাঁধ ঘোষণা করা বা অরুণাচলের বেশ কয়েকটা জায়গার নাম বদলে ফেলার ঘটনা কিন্তু ভারতের চিন্তার কারণ থেকেছে।”

এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি ওয়াং ই-র কাবুল সফরের কথাও টেনে এনেছেন। তার কথায়, “ওয়াং ই কাবুল সফরে গিয়ে আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সিপেক (চায়না পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর) তৈরির বিষয়ে আফগানিস্তানের সহযোগিতার কথা ভাবছে চীন। এখান থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে তাদের মনোভাবের পরিবর্তন হয়নি।”

ভারত-চীনের সম্পর্কে পাকিস্তানের প্রসঙ্গ টেনেছেন গীতাঞ্জলি সিনহা রায়ও। তিনি বলেছেন, “১৯৬২ সালের (ভারত-চীন যুদ্ধ) কথা ভারত ভুলতে পারেনি। তারপর ডোকলাম এবং গালওয়ানের মতো ঘটনা ঘটেছে। অনেক সূত্রই দাবি করেছে (পাকিস্তানের বিরুদ্ধে) অপারেশন সিন্দুরের সময় পাকিস্তান চীনের সমর্থন পেয়েছে।”

‘কোয়াড’-এর ওপর প্রভাব
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে ভারতের সাম্প্রতিক সমীকরণের আবহে ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের জোট 'কোয়াডে' প্রভাব পড়তে পারে বলে মত প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞদের অনেকে।

এই প্রসঙ্গে উপমন্যু বসু বলেন, “কোয়াডের অস্তিত্ব ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এটা অস্বীকার করার জায়গা নেই। কিন্তু ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের টানাপোড়েনের জন্য কোয়াড প্রভাবিত হবে বলে আমার মনে হয় না, কারণ সেখানে জাপানের মতো দেশও রয়েছে।”

তিনি বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসনের আচরণের জন্য কূটনৈতিকস্তরে কিছু প্রভাব পড়লেও পলিটিক্যাল রিয়েলিটি ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয় বলাটা ওভার স্ট্রেচড।”

ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক
যুক্তরাষ্ট্রকে এবং ভারত দুজনেই যে একে অপরকে উপেক্ষা করতে পারবে না তা মেনে নিয়েছেন দুই বিশেষজ্ঞই। উপমন্যু বসুর কথায়, “ট্রাম্পের পরেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক থাকবে। তাই শত অসুবিধা সত্ত্বেও ভারতের কূটনৈতিক সংঘাত এড়িয় চলা দরকার। আমার মতে এই মুহূর্তে ভারতের কাছে অপেক্ষা করা ছাড়া পথ নেই।”

তিনি বলছেন, “আর ট্রাম্প প্রশাসন যাই বলুক যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও ভারতকে এড়িয়ে চলা সম্ভব না।”

ইতোমধ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী সার্জিও গোরের নাম ঘোষণা করেছেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে গীতাঞ্জলি সিনহা রায় বলেছেন, “চীনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না। কারণ সার্জিও গোর ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ। তাই বলা যায়, ট্রাম্পও ভারতের সম্পর্ক ভালো করতে চান।”

‘মোতওয়ানি জাদেজা ইনস্টিটিউট ফর আমেরিকান স্টাডিজ’-এর অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টরের পদে থাকা এই বিশেষজ্ঞ বলেছেন, “চীনে যাওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী মোদী জাপানে যাচ্ছেন। জাপান ভারতের সবসময়ের বন্ধু এটা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বার্তা যে ভারত রাতারাতি চীনের কাছে যাচ্ছে না এবং যুক্তরাষ্ট্রকে তারা গুরুত্ব দেয়।”

ভারতের বহু-প্রান্তিক কূটনৈতিক কৌশল
রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কসহ একাধিক বিষয়কে কেন্দ্র করে ভারতের মাল্টি অ্যালাইনমেন্ট পলিসি বা বহু-প্রান্তিক কূটনৈতিক কৌশল সমালোচিত হয়েছে।

ফ্রান্সের ভূ-রাজনীতি এবং অর্থনীতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আর্নড বার্ট্রান্ড মন্তব্য করেছেন, “ভারতের বহু-প্রান্তিক কূটনৈতিক কৌশলের ব্যর্থতা স্পষ্টভাবেই ব্যর্থ হয়েছে। এই কৌশল ভারতকে সকলের কাছে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলার কথা ছিল কিন্তু তা সবার কাছে অপ্রয়োজনীয় করে তুলেছে।”

কিন্তু এই যুক্তি মানতে নারাজ ভারতীয় বিশেষজ্ঞদের অনেকেই। উপমন্যু বসু বলেছেন, “কোন দেশ মাল্টি অ্যালাইনড নয়? ভারতের ডিপ্লোম্যাটিক ক্যাপিটাল রয়েছে যার ওপর ভিত্তি করে ভারত রাশিয়া, চীনের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে আবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও আলোচনা করতে পারে।”

গীতাঞ্জলি সিনহা রায়ের কথায়, “নিজেদের কৌশলগত স্বাতন্ত্র বজায় রাখার কারণে অন্যান্য দেশের সঙ্গে ভারত ভাল সম্পর্ক রেখেছে। দেশের স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়েই এই পদক্ষেপ নিয়েছে। মাল্টিপোলার বিশ্বে ভারত ব্রিক্স এবং কোয়াডের মতো একাধিক জোটে রয়েছে।”

ভারত-চীন সত্যিই বন্ধু হতে পারবে?
সাম্প্রতিক আবহে আরও দুটো প্রশ্ন উঠেছে। প্রথমত, চীন যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প হয়ে উঠতে পারবে কি না এবং দ্বিতীয়ত, ভারত- চীন সত্যিই বন্ধু হতে পারবে কি না?

এই বিষয়ে উপমন্যু বসু বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের আচরণ আসলে চীনকে সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র যত তার কৌশলগত অংশীদার দেশগুলোর সঙ্গে এইভাবে দাদাগিরি দেখাবে, চীনের পক্ষে তারা বৈশ্বিকস্তরে ততই সুবিধা করে দেবে।”

গীতাঞ্জলি সিনহা রায় মনে করেন চীন কখনোই বিকল্প নয়। তার কথায়, “আমার মনে হয় না ভারতের কাছে চীন কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প হয়ে উঠতে পারবে।”

আর বন্ধুত্ব? এই প্রশ্নের উত্তরে উপমন্যু বসু বলেছেন, “ভারত- চীন বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে উঠবে সেটা বোধহয় সম্ভব নয়। পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের বৈঠক প্রমাণ করে যে চীনও ভারতকে প্রিয় বন্ধু করার বিষয়ে আগ্রহী নয়।”

দার ভাষায়, “বৈশ্বিকস্তরে দুই দেশই পোক্ত খেলোয়াড়। একমাত্র সমাধান হতে পারে দুই দেশের পক্ষ থেকেই কৌশলগত ভারসাম্যকে রক্ষা করা।” বিবিসি বাংলা

এসএন/রুপা


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top