যুদ্ধ থামাতে গাজায় ‘নিরপেক্ষ প্রশসান’ গঠনের প্রস্তাব ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর
প্রকাশিত:
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬:৪৪
আপডেট:
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২৩:১৬

যুদ্ধ অবসানের স্বার্থে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নিরপেক্ষ টেকনোক্র্যাটদের দ্বারা পরিচালিত প্রশাসন গঠনে রাজি হয়েছে উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস। গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে গোষ্ঠীটির হাই কমান্ড।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “গত ১৮ আগস্ট মধ্যস্থতাকারীরা গাজা পরিচালনার জন্য একটি নিরপেক্ষ ও টেকনোক্র্যাটভিত্তিক প্রশাসন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। হামাসের হাইকমান্ড সেই প্রস্তাবে রাজি হয়েছে। এখন আমরা ইসরায়েলের সাড়ার অপেক্ষা করছি।”
“সেই সঙ্গে আমরা সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিতেই সম্মত আছি; তবে তার পরিবর্তে ইসরায়েলের কারাগারে এখনও বন্দি থাকা ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দিতে হবে; কতজন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে— সেই সংখ্যা আলোচনার ভিত্তিতে নির্ধারণ করা যেতে পারে।”
“হামাস গাজা পরিচালনার জন্য নিরপেক্ষ প্রশাসনিক কাঠামো গঠনে রাজি হয়েছে মূলত যুদ্ধবিরতির স্বার্থে। নতুন প্রশাসনিক কাঠামো গাজা উপত্যকার যাবতীয় ইস্যু পরিচালনা করবে গাজা সংক্রান্ত প্র্রত্যেক বিষয় তাদের দায়িত্বে থাকবে। এর বিনিময়ে হামাসের দাবি— গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ করতে হবে, দখলদার শক্তির সেনবাহিনীর সব সদস্যকে গাজা থেকে প্রত্যাহার করতে হবে, গাজায় খাদ্য ও ত্রাণের প্রবেশের জন্য সীমান্ত ক্রসিংগুলো খুলে দিতে হবে এবং গাজায় পুনর্গঠনের কাজ শুরু করতে হবে।”
এদিকে গতকাল হামাস এই বিবৃতি প্রদানের কিছুক্ষণের মধ্যেই হামাসের এই প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করে পাল্টা বিবৃতি দিয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর।
হামাসের প্রস্তাবকে ‘কথার মারপ্যাঁচ’ উল্লেখ করে নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ইসরালের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা যেসব শর্ত নির্ধারণ করেছে, সেসব পূরণ হলে তাৎক্ষণিকভাবে এই যুদ্ধ থেমে যাবে। মন্ত্রিসভার নির্ধারিত শর্তগুলো হলো— অবিলম্বে সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে, হামাসকে অবশ্যই অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে, গাজাকে অসামরিকীকরণ করতে হবে, গাজার নিরাপত্তা ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং সেখানে এমন একটি বেসামরিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে— যেটি সন্ত্রাসবাদে উসকানি দেওয়া থেকে বিরত থাকবে এবং ইসরায়েলের জন্য কখনও হুমকি হয়ে উঠবে না।”
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫০ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে এসেছিল হামাসের যোদ্ধারা। অতর্কিত সেই হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের উদ্ধারে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনও চলছে।
ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছেন ৬৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন আরও অর্ধ লক্ষাধিক। পাশাপাশি দুই বছর ধরে টানা গোলাবর্ষণের ফলে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। ইসরায়েলি বাহিনী খাদ্য, ওষুধ ও ত্রাণবাহী ট্রাক উপত্যকায় প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করায় চরম মানবিক বিপর্যয় পরিস্থিতি চলছে সেখানে।
ইসরায়েরের দাবি, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যাদেরকে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে গিয়েছিল হামাস যোদ্ধারা, তাদের মধ্যে এখনও অন্তত ২০ জন জীবিত অবস্থায় আছে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: