চীনের প্যারেডে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভূমিকা’ উল্লেখ না করায় ট্রাম্পের ক্ষোভ
প্রকাশিত:
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:২৬
আপডেট:
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২৩:১৬

চীনের আয়োজিত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি উপলক্ষে ‘দৃষ্টিনন্দন অনুষ্ঠান’কে প্রশংসা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, জাপানের পরাজয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবদানের কথা সেখানে তুলে ধরা হয়নি।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বুধবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এটি ছিল এক দারুণ অনুষ্ঠান। অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক। গত রাতে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বক্তব্য আমি দেখেছি। তিনি আমার বন্ধু। তবে আমার মনে হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নামও সেখানে উল্লেখ করা উচিত ছিল, কারণ আমরা চীনকে অনেক বড় অবদান রেখেছি।’
চীনের ওয়াশিংটন দূতাবাস অবশ্য এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের ৮০ বছর পূর্তিকে তার সরকারের জন্য একটি বড় কূটনৈতিক প্রদর্শনীতে রূপ দিয়েছেন। এসময় তিনি এমন সব নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অবস্থান নেন, যাদের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক উত্তপ্ত।
বেইজিংয়ের তিয়েনআনমেন স্কয়ারে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষের সামনে শি জিনপিং ভাষণ দেন। তার দুই পাশে ছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। শি সামরিক কুচকাওয়াজে নতুন প্রযুক্তির অস্ত্র-শস্ত্র প্রদর্শনও পরিদর্শন করেন, যা যুক্তরাষ্ট্রসহ সম্ভাব্য প্রতিপক্ষদের উদ্দেশে একপ্রকার শক্তি প্রদর্শনী হিসেবে দেখা হয়েছে।
ইতিহাস বলছে, ১৯৩৭ সালে জাপানের চীন আক্রমণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের লড়াইকে তীব্র করে তোলে। ১৯৪৫ সালে জাপানের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। ১৯৪১ সালে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধে যোগ দিয়ে চীনা বাহিনীকে সহায়তা করেছিল এবং জাপানের পরাজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
শি জিনপিং বুধবারের ভাষণে ‘চীনা জনগণকে সহযোগিতা ও সমর্থন দেওয়া বিদেশি সরকার ও বন্ধুদের’ ধন্যবাদ জানালেও যুক্তরাষ্ট্রের অবদানকে বিশেষভাবে উল্লেখ করেননি। তিনি যুদ্ধ-পরবর্তী ঘটনাকে চীনের ‘মহান পুনর্জাগরণের’ অংশ হিসেবে তুলে ধরেন, যা এখন চীনা কমিউনিস্ট পার্টি ও তার মিত্রদের নেতৃত্বে এগিয়ে চলছে।
বর্তমান সময়ে যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্ক নানা ইস্যুতে টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে—ইউক্রেন সংকট, দক্ষিণ চীন সাগরে উত্তেজনা, বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে দ্বন্দ্ব—সব মিলিয়ে সম্পর্ক শীতল। তবে ট্রাম্প বারবার দাবি করেছেন, শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ইতিবাচক, যা বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতিকে গঠনমূলক পথে এগিয়ে নিতে পারে। তিনি আরও জানিয়েছেন, শিগগিরই শি’র সঙ্গে বৈঠক হতে পারে।
অনুষ্ঠান শুরুর সময় ট্রাম্প ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ শি জিনপিংকে উদ্দেশ করে লেখেন, ‘আমার উষ্ণ শুভেচ্ছা ভ্লাদিমির পুতিন ও কিম জং উনকে জানিও, যখন তোমরা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছো।’
এ নিয়ে ক্রেমলিন জানায়, তারা কোনো ষড়যন্ত্র করছে না এবং ট্রাম্পের মন্তব্যকে বিদ্রূপাত্মক হিসেবে দেখছে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: