জেলখানায় গুলিতে নিহত ৫
নেপালে সেনাবাহিনীর কারফিউ জারি
প্রকাশিত:
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:০২
আপডেট:
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:২৯

প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের পরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি নেপালে। বর্তমানে দেশটির শাসনভার সেনাবাহিনীর দখলে। রাস্তায় রাস্তায় টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী।
পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। বুধবার সকাল থেকে নেপালে বড় ধরনের কোনো অশান্তির ঘটনা না ঘটলেও চলছে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ।
দেশটির সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, নেপালের বাঁকে জেলার সংশোধনাগারে সংঘর্ষে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অন্যদিকে, আনুষ্ঠানিক ভাবে নেপালের দায়িত্ব নিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, যতদিন পর্যন্ত না নতুন সরকার গঠিত হচ্ছে, ততদিন নেপালের শাসনভার চালাবেন তারা।
শুধু তা-ই নয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশজুড়ে কার্ফিউ জারি করেছে সেনাবাহিনী। ছাত্র-যুবকদের আন্দোলনে গত সোমবার এবং মঙ্গলবার দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায় নেপালে।
কাঠমান্ডু থেকে বিদ্রোহের সূত্রপাত হলেও তা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে নেপালজুড়ে। হাজার হাজার বিদ্রোহী নেমে পড়েন রাস্তায়। হাতে প্ল্যাকার্ড, মুখে স্লোগান। দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান তারা।
মঙ্গলবার সকাল থেকে পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। বিক্ষোভকারীদের বিক্ষোভের আগুনের আঁচে পুড়তে থাকে নেপালের পার্লামেন্ট ভবন, ওলি এবং তার মন্ত্রীদের বাসভবন। দেশটির সুপ্রিম কোর্টেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সুযোগে নেপালের জেলগুলিতে বিদ্রোহের আগুন ছড়ায়। নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে বন্দিদের সংঘর্ষের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। জেল ভেঙে পালানোর চেষ্টা করেন শত শত বন্দি।
প্রতিরোধ করতে গেলে আক্রান্ত হন নিরাপত্তারক্ষীরা। পাল্টা গুলিও চালান তারা। বাঁকের সংশোধনাগারে বন্দিরা পালানোর চেষ্টা করতেই গুলি চালায় পুলিশ।
তাদের গুলিতে সাত জন আহত হন বলে খবর পাওয়া গেছে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাঁচজনের মৃত্য হয়।
বাঁকে জেলার পোখরান জেলে হামলা চালায় আন্দোলনকারীরা। এ পর্যন্ত ১৬০০ বন্দি বিভিন্ন জেল থেকে পালিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নেপালের বিভিন্ন দিকে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
সংবেদনশীল এলাকায় টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার রাতেই আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন নেপালের সেনাপ্রধান অশোকরাজ সিগডেল।
বিক্ষোভকারীদের দাবি-দাওয়া কী, তা জানাই উদ্দেশ্য ছিল ওই বৈঠকের। বুধবার নেপালের রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌডেলের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধিদলের বৈঠকে বসার কথা।
সেই বৈঠকে মধ্যস্থতার করবে নেপালের সেনাবাহিনী। আশা করা হচ্ছে, ওই বৈঠক থেকে সমাধান বের হতে পারে।
নেপাল সরকারের প্রধান সচিবালয় ভবনের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনাবাহিনী। দেশে লুটপাট চালালে, ভাঙচুর করলে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে, এমনটাই জানিয়ে নেপালের সেনাবাহিনী।
দেশের নাগরিকদেরও সহযোগিতা চেয়েছে তারা। বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে অশোকরাজের আহ্বান, প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে বিরত থেকে আলোচনায় বসুন। কঠিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে আমাদের।
নেপালের সেনাবাহিনী জানায়, দেশের সার্বভৌমত্ব, বাসিন্দাদের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখতে বদ্ধপরিকর। তবে সেনাবাহিনীর দাবি, কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী দেশের অস্থির পরিস্থিতির সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: