সোমবার, ৪ঠা আগস্ট ২০২৫, ২০শে শ্রাবণ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


ইমরান শরীফের আপিল খারিজ, মায়ের জিম্মায় জাপানি দুই শিশু


প্রকাশিত:
১৬ জুলাই ২০২৩ ২২:১৪

আপডেট:
৪ আগস্ট ২০২৫ ২৩:৪১

 ফাইল ছবি

জাপানি বংশোদ্ভূত সেই দুই শিশুকে নিজ জিম্মায় (হেফাজতে) রাখতে বাবা ইমরান শরিফের করা আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। যার ফলে সেই দুই শিশু মা নাকানো এরিকোর জিম্মাতেই থাকবেন।

রোববার (১৬ জুলাই) ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এবং পারিবারিক আপিল আদালতের বিচারক এ. এইচ. এম. হাবিবুর রহমান ভূঁইয়ার আদালত এ আদেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী আমিনুল ইসলাম বিষয়টি জানিয়েছেন।

গত ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরীফ ও জাপানি মা নাকানো এরিকোর দুই শিশুকে জাপানি মা নাকানো এরিকোর জিম্মায় রাখার নির্দেশ দেন আদালত। নাবালিকা দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা কোথায় থাকলে কল্যাণ হবে সেদিক বিবেচনায় রেখে এ রায় দেওয়া হয়। ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান এ রায় দেন।

আদালতের পর্যবেক্ষণ

রায়ে আদালত বলেছেন, মামলা করার কারণ আদালতের কাছে প্রমাণ করতে পারেনি বাদীপক্ষ। বরং আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে, জাপান থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা দুই শিশুর বেড়ে ওঠা জাপানে। সেখানে তারা লেখাপড়া করেছে। তাদের মা নাকানো এরিকো পেশায় একজন চিকিৎসক। তিনটি সন্তান জন্মের পর মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়ে সন্তানদের পাশে ছিলেন।

পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, জাপানে বেড়ে ওঠা দুই শিশুর প্রাথমিক শুশ্রূষাকারী তাদের মা নাকানো এরিকো। অথচ তাকে কিছু না জানিয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে আইনগত প্রক্রিয়া ছাড়া হঠাৎ অন্য একটি দেশে নিয়ে আসাটা মাতৃত্বের বিশ্বজনীন ও সর্বজনীন রূপটিকে অসম্মান করার নামান্তর।

রায়ে আদালত আরও বলেছেন, বাবা হিসেবে ইমরান শরীফ নাবালিকা দুই সন্তানের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করার পূর্ণ হকদার। তবে জাপানি মায়ের কাছে দুই নাবালিকার হেফাজত তাদের শারীরিক, মানসিক ও পারিপার্শ্বিক, তথা সার্বিক মঙ্গলজনক বলে আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।

এই রায়ের বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে আপিল করেন বাবা ইমরান শরীফ।

জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকোর সঙ্গে বাংলাদেশি প্রকৌশলী ইমরান শরীফের বিয়ে হয় ২০০৮ সালে। দাম্পত্য কলহের জেরে ২০২০ সালের শুরুতে বিচ্ছেদের আবেদন করেন এরিকো। এরপর ইমরান স্কুলপড়ুয়া বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। ছোট মেয়ে জাপানে এরিকোর সঙ্গে থেকে যান।

মেয়েদের জিম্মা পেতে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে গত বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশে আসেন এ জাপানি নারী। তিনি হাইকোর্টে রিট আবেদন করলে তাদের সমঝোতায় আসতে বলেন বিচারক। তবে ওই দম্পতি সমঝোতায় না আসায় কয়েক মাস ধরে শুনানির পর হাইকোর্ট দুই সন্তানকে বাবার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত দেন। পাশাপাশি মা যাতে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বাবাকে খরচ দিতে বলা হয়।

হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন শিশুদের মা নাকানো এরিকো। পরে আপিল বিভাগ এক আদেশে শিশু দুটিকে মায়ের জিম্মায় রাখার নির্দেশ দিলেও বাবা সেটা না মানায় বিচারকরা উষ্মা প্রকাশ করেন। পরে আদালত শিশু দুটিকে বাবার হেফাজত থেকে এনে তাদের সঙ্গে কথা বলে এবং পরে মায়ের হেফাজতে দেওয়ার আদেশ দেন।

এরপর গত বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়ে কার জিম্মায় থাকবে, তার নিষ্পত্তি পারিবারিক আদালতে হবে এবং তার আগ পর্যন্ত দুই শিশু তাদের মায়ের কাছেই থাকবে বলে সিদ্ধান্ত দেন আপিল বিভাগ। এরপর আপিল বিভাগ থেকে মামলাটি পারিবারিক আদালতে আসে।

এদিকে, গত ২৩ ডিসেম্বর রাতে দুই সন্তান নিয়ে জাপানে যাওয়ার জন্য ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান এরিকো নাকানো। আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে সন্তানদের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করায় তাকে বিমানবন্দর থেকে পুলিশ ফিরিয়ে দেয়।

এ ঘটনায় ২৯ ডিসেম্বর বাবা ইমরান শরিফ ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিবের আদালতে মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top