স্ট্রোক করলে সঙ্গে সঙ্গে যা করবেন, যা করবেন না
প্রকাশিত:
৩০ জুন ২০২৫ ১৮:০৬
আপডেট:
৩০ জুন ২০২৫ ২২:৩১

প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে হার্ট অ্যাটাক আর স্ট্রোকের ঝুঁকি। রোজকার খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন, কম শারীরিক পরিশ্রম, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রেস, দুশ্চিন্তা ইত্যাদি কারণে এসব রোগ বাড়ছে। চোখের সামনে কেউ স্ট্রোক করলে আমরা হিতাহিত জ্ঞানশুন্য হয়ে পড়ি। কী করব ভেবে পাই না।
কেউ কেউ আবার স্ট্রোক আর হার্ট অ্যাটাক গুলিয়ে ফেলেন। অনেকে মনে করেন, স্ট্রোক হার্টে হয়। এই ধারণা ভুল। আসলে স্ট্রোক হয় ব্রেইনে। হৃদপিণ্ডে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে তাকে হার্ট অ্যাটাক বলে। ব্রেইনে কোনো কারণে রক্ত সরবরাহ বিঘ্ন হলে রক্তের অভাবে কিছু ব্রেইন টিস্যু মারা যায়। একেই স্ট্রোক বলে।
স্ট্রোকের সঙ্গে সঙ্গে সেটি বুঝতে পারলে জীবনরক্ষা সম্ভব হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা তা বুঝতে পারি না, ফলে হাসপাতালে নিতে দেরি হয়ে। এতে স্ট্রোকে মৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে যায় এবং স্ট্রোক পরবর্তী সমস্যাও আরও বেড়ে যায়।
স্ট্রোক হয়েছে কিনা বোঝার উপায়
প্রথমত FAST শব্দটি দ্বারা স্ট্রোক হয়েছে কিনা নিশ্চিত হোন।
F = Face (মুখ), স্ট্রোকের সঙ্গে সঙ্গে বেঁকে যায় মুখ।
A = Arm (হাত), শরীরের যেকোনো এক পাশের হাত-পা প্যারালাইসিস হয়ে যায়।
S = Speech (কথা) কথা বলতে সমস্যা হয়।
T = Time to call 999 for Ambulance (অ্যাম্বুলেন্স ডাকুন)।
আপনি FAST শব্দটি দ্বারা যদি বুঝতে পারেন নিকটজন স্ট্রোক করছে তাহলে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
কেউ স্ট্রোক করলে প্রাথমিকভাবে করণীয়
শুইয়ে দিন
রোগীর যদি জ্ঞান থাকে তাহলে এক পাশ করে শুইয়ে দিন। প্যারালাইসিস অংশ ওপরে থাকবে, সুস্থ অংশ বিছানার সঙ্গে নিচে থাকবে। এবার একটি উঁচু বালিশ বা দুটি বালিশ দিয়ে মাথা ওপরের দিকে রাখবেন। অবশ্যই মাথা এবং প্যারালাইসিস হাতকে সাপোর্ট দিয়ে রাখবেন। লক্ষ্য রাখবেন, প্যারালাইসিস হাত যেন ঝুলে না থাকে।
টানাটানি নয়
কোনোভাবেই প্যারালাইসিস হাত নিয়ে টানাটানি করবেন না। এতে করে পরবর্তীতে সোল্ডার সাবলাক্সেশন হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এমন ঘটনা হয়ে থাকে। ফলে ওই রোগীকে পরবর্তীতে ভালো করা কঠিন হয়ে যায়। বিশেষ করে হাতের ফাংশন বাধাগ্রস্ত হয়।
কিছু খেতে দেবেন না
স্ট্রোক করা রোগীকে কোনো কিছু খেতে দেবেন না। এমন কী পানিও পান করতেও দেবেন না।
শ্বাস-প্রশ্বাস দেখুন
শরীরে কোনো টাইট পোশাক থাকলে তা খুলে দিন যেন শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে রোগীর কোনো অসুবিধা না হয়। রোগী যদি অজ্ঞান থাকে, তাহলে রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস এবং পালস চেক করুন। শ্বাস-প্রশ্বাস এবং পালস ওকে থাকলে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য অপেক্ষা করুন।
শ্বাস-প্রশ্বাস আর পালস পাওয়া না গেলে সিপিআর (CPR-Cardiopulmonary Resuscitation) শুরু করতে পারেন। যদি সেটি আপনার জানা থাকে। আর জানা না থাকলে নিকটবর্তী হেলথ কেয়ার প্রফেশনালের সহযোগিতা নিতে পারেন।
এসএস /সীমা
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: