ওষুধ ছাড়াই গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তির উপায়
প্রকাশিত:
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:৫৭
আপডেট:
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:২৯

গ্যাস্ট্রিক বা অম্লতার সমস্যায় ভোগেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। অনেকেই ওষুধ খেয়ে অস্থায়ীভাবে মুক্তি পান, কিন্তু জীবনধারায় পরিবর্তন না আনলে সমস্যা বারবার ফিরে আসে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্যাস্ট্রিকের স্থায়ী সমাধান লুকিয়ে আছে আমাদের প্রতিদিনের খাবারে।
গ্যাস্ট্রিকের মূল কারণ
গ্যাস্ট্রিক হওয়ার প্রধান কারণ হলো আঁশজাতীয় খাবার কম খাওয়া এবং মাংস ও তেলেভাজা খাবার বেশি খাওয়া। এসব খাবার পাকস্থলিতে ইউরিক এসিড তৈরি করে, যা থেকে গ্যাসের সৃষ্টি হয়।
প্রাকৃতিক সমাধান
দিনের শুরুতে হালকা গরম পানি: সকালে ঘুম থেকে উঠে দুই গ্লাস হালকা গরম পানি পান করলে পাকস্থলি পরিষ্কার থাকে।
ভেজানো ছোলা: আগের রাতে ভিজিয়ে রাখা দুই মুঠো কাঁচা ছোলা খেলে পাকস্থলিতে ইউরিক এসিড তৈরি হয় না।
চিড়া-দই ও সালাদ: প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালির সকালের খাবার হিসেবে প্রচলিত ছিল। এটি পেটের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
তেলেভাজা খাবার এড়িয়ে চলা: অন্তত দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভাজা খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
সবজির গুণ
গাজর: ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ, এতে বিটা-ক্যারোটিন আছে যা চোখ ও হজমের জন্য উপকারী।
টমেটো: ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও লাইকোপেন সমৃদ্ধ, যা দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
পেঁপে: লিভারের জন্য উপকারী এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
ধনেপাতা, পুদিনা পাতা, থানকুনি পাতা: পাকস্থলিকে ঠান্ডা রাখে এবং গ্যাস্ট্রিক প্রতিরোধে কার্যকর।
দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের জন্য করণীয়
যারা দুই-তিন বছর ধরে গ্যাস্ট্রিক বা আলসারে ভুগছেন, তাদের কমপক্ষে তিন মাস দই, মাঠা, পেঁপে, পুদিনা পাতা ও ধনে পাতা নিয়মিত খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এই সময়টিতে মাংস ও তেলেভাজা খাবার বাদ দিয়ে ভেজিটেরিয়ান খাবার খেলে পাকস্থলির ক্ষতিগ্রস্ত স্তর মেরামত হয়।
সুস্থ জীবনের অভ্যাস
সুইজারল্যান্ডের উদাহরণ টেনে বলা হয়—সেখানে স্বাস্থ্যকর খাবারের কারণে হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক কম। আমাদের দেশেও হাজারো ভেষজ গাছপালা রয়েছে, যা নিয়মিত খাবারের মাধ্যমে গ্যাস্ট্রিকসহ নানা রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি পেতে ওষুধের ওপর নির্ভর না করে খাবারাভ্যাসে পরিবর্তন আনাই সবচেয়ে কার্যকর উপায়। আঁশযুক্ত খাবার, দই, ছোলা, সালাদ ও দেশীয় সবজি নিয়মিত খেলে গ্যাস্ট্রিক, আলসার, কোষ্ঠকাঠিন্যসহ নানা পেটের সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: