ঢাকায় এগ্রি নেটওয়ার্কের বার্ষিক অগ্রগতি সভা শুরু
প্রকাশিত:
১২ মার্চ ২০২৩ ০২:৩৭
আপডেট:
১৩ মে ২০২৫ ১৭:১৯

ঢাকায় এগ্রি নেটওয়ার্ক ট্রায়ালের ২ দিনব্যাপী বার্ষিক অগ্রগতি সভা শুরু হয়েছে। শনিবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে এ সভার আয়োজন করে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইআরআরআই) বাংলাদেশ।
এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী সেশনে সভাপতিত্ব করেন আইআরআরআই বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. হোমনাথ ভাণ্ডারী। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইআরআরআই ফিলিপাইনের বিজ্ঞানী ড. সংকল্প ভোসালে।
আইআরআরআই বাংলাদেশের সিনিয়র রাইস ব্রিডার এবং এগ্রি নেটওয়ার্ক প্রকল্প প্রধান ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম স্বাগত বক্তব্য দেন এবং কর্মশালার এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বাংলাদেশে আইআরআরআই-ব্রি, অন্যান্য কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক পরিচালিত এগ্রি নেটওয়ার্ক ট্রায়ালের গত এক বছরের হালনাগাদ তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেন।
বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের (বিএমজিএফ) অর্থায়নে আইআরআরআই ও ব্রি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে ধানের জাত উদ্ভাবন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ পরিস্থিতিতে উন্নতজাতের ধান গবেষণার জন্য এগ্রি নেটওয়ার্ক ট্রায়ালের বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ কর্মসূচি নিয়ে মোট ১১টি প্রবন্ধ কর্মশালায় উপস্থাপন করা হয়। সভায় আইআরআরআই, ব্রি, বিনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কৃষিবিজ্ঞানীরা ও গণমাধ্যমকর্মীসহ শতাধিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিনার মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের বৈচিত্র্যময় পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে এমন অভিনব উন্নত ও উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবনের এখনই উপযুক্ত সময়। ব্রি, বিনাসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ধান উৎপাদন বৃদ্ধি এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষকদের সহায়তা করছে আইআরআরআই।
তিনি জানান, এগ্রি নেটওয়ার্ক প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ধানের জেনেটিক গেইন বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে। বর্তমানে মাঠে প্রচলিত বেশিরভাগ জনপ্রিয় ধানের জাতের বয়স ২৮-৩০ বছরের বেশি। অনেকগুলো নতুন জাত উদ্ভাবন করা হলেও সেগুলো আগের জনপ্রিয় জাতগুলোকে প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হয়নি। ধান উৎপাদনে জেনেটিক গেইন বাড়ানোর জন্য ধানের প্রজনন চক্রের সময়কাল সংক্ষিপ্ত করা, প্রজনন লাইন নির্বাচন নির্ভুল করা, প্রজনন তথ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিক কৌশল ব্যবহার এবং ব্যাপকভাবে সরেজমিন মাঠ গবেষণা করে ভৌগলিক স্থান, বাজার ও কৃষকের চাহিদা ভিত্তিক জাত উদ্ভাবনের লক্ষ্যে আইআরআরআইয়ের নেতৃত্বে কাজ করছে দেশীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্রি মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, বিএমজিএফের আর্থিক সহায়তায় এবং আইআরআরআইয়ের কারিগরি সহায়তায় এগ্রি নেটওয়ার্ক ট্রায়ালের মাধ্যমে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ধানের জাত উদ্ভাবন প্রক্রিয়ার সময় ৫-৭ বছর কমিয়ে আনা হচ্ছে। আগে যেখানে একটি জাত উদ্ভাবনে ১০-১৫বছর লেগে যেত এখন তা ৮-১০ বছরে সম্পন্ন করা যাবে। গবেষণা কার্যক্রমের আধুনিকীকরণের মাধ্যমে আগামী দিনের ধানের জাতে জেনেটিক গেইন (ফলন) অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।
এর মাধ্যমে ভৌগলিক স্থান, বাজার ও কৃষকের চাহিদা মাফিক ধানের জাত উদ্ভাবনের ফলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশে আইআরআরআইয়ের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. হোমনাথ ভাণ্ডারী বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই করার জন্য আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। গবেষণা ও মানবসম্পদ এবং ভৌত সুবিধার উন্নয়নসহ সব ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের গবেষণা খাতে ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন। বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি যেমন জিনোমিক্স, ফেনোমিক্স, প্রোটোমিক্স, বায়োইনফরমেটিক্স, জিনোম এডিটিং, স্পিড ব্রিডিং, অটোমেশন, ডিজিটাইজেশনে বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আইআরআরআইয়ের সহায়তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে ।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: