বৃহঃস্পতিবার, ১৫ই মে ২০২৫, ৩১শে বৈশাখ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ‘শ্বেতহস্তীর’ আশঙ্কা দেখছে সিপিডি


প্রকাশিত:
২২ জুন ২০২৩ ১৯:৪৯

আপডেট:
১৫ মে ২০২৫ ০২:৫৪

 ফাইল ছবি

জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে সরকার মোটেই বাস্তবতা থেকে শিক্ষা নিচ্ছে না। এলএনজির ওপর আরও নির্ভরতা বাড়িয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে।

এমন অবস্থা চলতে থাকলে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত শ্বেতহস্তীতে পরিণত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

বৃহস্পতিবার (২২ জুন) গুলশানের অভিজাত রেস্তোরাঁয় জ্বালানি ও বিদ্যুৎ বিষয়ক সমস্যা এবং প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে করণীয় শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এমন আশঙ্কার কথা জানানো হয়। সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এ সংক্রান্ত গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন।

গবেষণাপত্রে গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাত ভর্তুকিনির্ভর হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে ভর্তুকির রেট গত বছরের তুলনায় ৩৪ শতাংশ বেড়েছে। জিডিপি হিসাবেও অনেক বড়। ভবিষ্যতে এমন ভর্তুকির বিষয়টি কীভাবে হ্যান্ডেল করা হবে? এর ফলে সামাজিক নিরাপত্তা খাতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে কি না, সেটাই বড় প্রশ্ন।’

‘একদিকে লোকসান, অন্যদিকে ফিক্সড অ্যাসেটে বিনিয়োগের জন্য ব্যয় করা হচ্ছে। সরকারের কাছ থেকে ভর্তুকি নেওয়ার পাশাপাশি লোকসানের অজুহাতে জনগণের কাছ থেকে ট্যারিফ মূল্য বাড়িয়ে বাড়তি অর্থ আদায় করা হচ্ছে।

আমার কাছে এ হিসাবটা গোলমেলে মনে হচ্ছে। বিপিসি, বিপিডিপি ও পেট্রোবাংলাসহ এনার্জি সেক্টরের প্রতিষ্ঠানগুলোর ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিংয়ে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। এখানে স্বচ্ছতার প্রয়োজন। সর্বশেষ জ্বালানির মূল্য বাড়ানোর ফলে বিপিসি বিপুল পরিমাণ লাভ করে যাচ্ছে।

বাজারভিত্তিক মূল্য ব্যবস্থায় যদি সরকার যায়, তাহলে ভোক্তার ওপর বোঝা বাড়তেই থাকবে। ক্যাপাসিটি কস্ট যদি বাদ বা কমানো যায় এবং স্বচ্ছতা বাড়ানো যায়, তাহলে ভোক্তা পর্যায়ে মূল্য কমানো সম্ভব।’

তিনি বলেন, ‘এবারের বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ ২৮ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। বাড়তি বরাদ্দের ৯৩ শতাংশ রাখা হয়েছে পাওয়ার জেনারেশনে। বাজেটে ৯৬টি প্রজেক্টের মধ্যে মাত্র পাঁচটি দেখতে পাচ্ছি নবায়নযোগ্য জ্বালানি। আগামীতে ২৩ হাজার মেগাওয়াট নতুন বিদ্যুৎ যোগ হতে যাচ্ছে বলে অর্থমন্ত্রী বলেছেন। বাড়তি এ বিদ্যুৎ নিয়ে কী করব, সেটাই দুশ্চিন্তার কারণ।’

সিপিডির মতে, সরকার জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে মোটেই বাস্তবতা থেকে শিক্ষা নিচ্ছে না। বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে যে উদ্যোগ ও পরিকল্পনা করা দরকার তা হচ্ছে না। বিদ্যুৎ খাতে এলএনজির ওপরে আরও নির্ভরতার কৌশল আমরা দেখতে পাচ্ছি।

অথচ এ জায়গা থেকে সরে আসা দরকার। নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে এখনও এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। অথচ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ব্যাপক বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। যে পথে সরকার যাচ্ছে, সেটি শুভকর নয়। লোডশেডিং চলমান থাকবে।

জ্বালানি সেক্টরের জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ আগামীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এ অবস্থা চলতে থাকলে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে শ্বেতহস্তী (কাজে আসে না কিন্তু দামি) দেখব কি না, সেই আশঙ্কা রয়েছে। এখনই সেদিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন।

‘বর্তমানে আইএমএফকেন্দ্রিক যে সংস্কার চলছে, সেই সংস্কার দিয়ে জ্বালানি খাতের সংস্কার সম্ভব হবে না। এর বাইরে অন্য দৃষ্টিভঙ্গি থেকেও দেখতে হবে’— মনে করে সিপিডি।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top