মঙ্গলবার, ৬ই মে ২০২৫, ২২শে বৈশাখ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


তীব্র বজ্রপাত, কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা


প্রকাশিত:
৪ মে ২০২৪ ১৪:২৩

আপডেট:
৬ মে ২০২৫ ০৩:১৫

 ফাইল ছবি

# শক্তিশালী বৃষ্টিবলয়ের মধ্যে বাংলাদেশ
# সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হতে পারে ঢাকাসহ ছয় বিভাগে
# ১০ দিনের জন্য বৃষ্টির কবলে পড়তে যাচ্ছে দেশ
# ১০ দিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হবে সিলেটে
# বৃষ্টিবলয়ের বিদায়ের পর শুরু হবে তীব্র তাপপ্রবাহ

দীর্ঘ তাপপ্রবাহ শেষে রোববার (০৫ মে) থেকে শক্তিশালী বৃষ্টিবলয়ের মধ্যে প্রবেশ করতে যাচ্ছে দেশ। এর ফলে তীব্র বজ্রপাত, কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টির আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বেসরকারি আবহাওয়া সংস্থা বাংলাদেশ আবহাওয়া অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি)।

এদিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরও জানিয়েছে, মে মাসে সামগ্রিকভাবে দেশে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে বজ্রপাত, শিলাবৃষ্টির ও তীব্র কালবৈশাখী হাওয়ার কথাও জানিয়েছে সরকারি এ সংস্থাটি।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অবজারভেশন টিম জানায়, আগামীকাল (০৫ মে) থেকে ১৫ মে পর্যন্ত দেশে বৃষ্টিবলয় সক্রিয় থাকবে। অর্থাৎ ১০ দিনের জন্য বৃষ্টির কবলে পড়তে যাচ্ছে দেশ। এই ১০ দিনে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগে সিলেট বিভাগে বৃষ্টিবলয় বিরাজ করবে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সিলেট বিভাগে বৃষ্টিবলয় থাকবে। এছাড়া দেশের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগগুলোতে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিবলয়ের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানায় আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া বেসরকারি এই সংস্থাটি।

বিডব্লিউওটির প্রধান আবহাওয়া গবেষক খালিদ হোসেন বলেন, একটি তীব্র বজ্রপাত যুক্ত বৃষ্টিবলয় দেশের দিকে ধেয়ে আসছে। এই বৃষ্টি বলয়ে দেশের অনেক এলাকায় প্রবল কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলে শক্তিশালী প্রবল কালবৈশাখী ঝড়ের সম্ভাবনা আছে।

তিনি জানান, বৃষ্টিবলয় প্রথমদিকে দেশের পূর্ব অঞ্চলে বেশি সক্রিয় থাকতে পারে এবং পরবর্তী সময়ে দেশের বাকি এলাকায় সক্রিয় হতে পারে। এই বৃষ্টিবলয় আগামী ৫ মে সিলেট, চট্টগ্রাম বিভাগের পশ্চিম অংশ দিয়ে দেশে প্রবেশ করতে পারে ও আগামী ১৫ মে সিলেট হয়ে দেশ ছাড়তে পারে। বৃষ্টিবলয়টি চলাকালীন সিলেট বিভাগের অনেক এলাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু এলাকায় একটানা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বর্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এই সময়ে সিলেটের নিচু এলাকায় সাময়িক বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

এ আবহাওয়া গবেষক জানান, বৃষ্টিবলয়ের মধ্যেই রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অনেক এলাকায় মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ ও দেশের বাকি এলাকায় স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকতে পারে। তবে আগামী ১৫ মের পর থেকে দেশে তাপপ্রবাহ আবার ফেরত আসতে পারে। এক্ষেত্রে এই তাপপ্রবাহ অতি তীব্র তাপপ্রবাহে উন্নীত হতে পারে। যা এপ্রিল রেকর্ডকৃত সর্বোচ্চ তাপমাত্রার অনুরূপ বা তাকেও ছাপিয়ে যেতে পারে।

আবহাওয়া গবেষক খালিদ হোসেন জানান, বৃষ্টিবলয়ের অবস্থানকালীন ১০ দিনে সবচেয়ে বেশি সিলেট বিভাগে ১৭৫ মিলিমিটার (সামান্য কম-বেশি) বৃষ্টিপাত হতে পারে। এছাড়া ঢাকা ও বরিশাল বিভাগে ১০০ মিলিমিটার (সামান্য কম-বেশি), খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৯৫ মিলিমিটার (সামান্য কম-বেশি), চট্টগ্রাম বিভাগে ৯০ মিলিমিটার (সামান্য কম-বেশি), রংপুর বিভাগে ৬৫ মিলিমিটার (সামান্য কম-বেশি) এবং রাজশাহী বিভাগে ৫৫ মিলিমিটার (সামান্য কম-বেশি) বৃষ্টিপাত হতে পারে। অধিকাংশ বৃষ্টিপাত বিকেল থেকে পরদিন সকালের মধ্যে হতে পারে।

বঙ্গোপসাগরের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি আরও জানান, গত কয়েকদিন তাপপ্রবাহ চলমান থাকার কারণে তীব্র প্রেসার গ্রেডিয়েন্ট তৈরি হয়েছে। যার ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর উত্তাল অবস্থায় রয়েছে। এই অবস্থা আগামী কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে। এই সময়ে উত্তর বঙ্গোপসাগরের গভীরে তথা উপকূল থেকে ১০০ কিলোমিটার বা তার বেশি দূরত্বে ঢেউয়ের উচ্চতা ৬ থেকে ৮ ফুট পর্যন্ত হচ্ছে। তাই সমুদ্রে মাছ ধরার ট্রলারগুলোর জন্য আগামী কয়েকদিন সমুদ্রে না নামাই ভালো বা নামলেও সতর্কতার সঙ্গে চলাচল করতে হবে। এছাড়া মে মাসের তৃতীয় অথবা চতুর্থ সপ্তাহে বঙ্গোপসাগর একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। যা পরে নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়েও রূপ নিতে পারে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান জানায়, এই মাসে সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এ মাসে দেশে ৩ থেকে ৫ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ হালকা ধরনের কালবৈশাখী ঝড় এবং ২ থেকে ৩ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি থেকে তীব্র কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে।

তিনি জানান, মে মাসেও দেশের কোথাও কোথাও ১ থেকে ৩টি মৃদু, মাঝারি এবং ১ থেকে ২টি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে ১ থেকে ২টি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। যার মধ্যে ১টি মাসের দ্বিতীয়ার্ধে নিম্নচাপ হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। এছাড়া মে মাসে দেশের প্রধান নদ-নদীগুলো স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান থাকতে পারে। তবে উজানে ভারি বৃষ্টির ফলে দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চালের নদীগুলোর পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং কিছু স্থানে বিপদসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হতে পারে।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top