১৬ বছর অপেক্ষা নয়, প্রতিবছর অভ্যুত্থান স্মরণের অঙ্গীকার
প্রকাশিত:
১ জুলাই ২০২৫ ১৪:০৬
আপডেট:
১ জুলাই ২০২৫ ২০:৩৬

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান প্রতিবছর উদযাপন করব। অভ্যুত্থানের জন্য যেন পরবর্তীতে ১৬ বছর আমাদের অপেক্ষা করতে না হয়। এমন পদক্ষেপ নিতে হবে যেন কোনো স্বৈরাচারের চিহ্ন দেখা গেলে, তাৎক্ষণিকভাবে তা বিনাশ করা যায়।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে জুলাই অভ্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আজ ইতিহাসের এক গৌরবময় ক্ষণ। এক বছর আগে এই জুলাই মাসে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তা এক অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। জুলাই ছিল দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে এক অমোঘ ডাক, এক জনতার জাগরণ। সেই আন্দোলনের মর্মবাণী ছিল— ফ্যাসিবাদের বিলোপ করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ, রাষ্ট্রকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া।
তিনি বলেন, এই অনুষ্ঠানমালা শুধু ভাবাবেগ নয়, এটা কোনো ক্ষোভ প্রকাশের জায়গাও নয়। বরং ১৬ বছর পর ঘোষিত বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে যে লক্ষ্য পূরণ হয়েছে, তার পেছনে ছিল একটি বড় স্বপ্ন— নতুনভাবে রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণ, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা প্রতি বছর এই সময়কাল উদযাপন করব, যাতে পরবর্তী সময়ে ১৬ বছর আমাদের অপেক্ষা করতে না হয় আবার অভ্যুত্থানের জন্য। আমরা এটা করব যেন স্বৈরাচারের কোনো চিহ্ন দেখা গেলে, তাৎক্ষণিকভাবে তা বিনাশ করা যায়। স্বৈরাচারের প্রথম পাতা মেলার আগেই যেন আমরা তাকে ধরে ফেলতে পারি।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, মাসব্যাপী এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য শুধু স্মরণ নয়, বরং একটি নতুন শপথ। গত বছরের জুলাইয়ে এ দেশের সব শ্রেণি-পেশা-বয়সের মানুষের মধ্যে যে ঐক্য তৈরি হয়েছিল, আমরা চাই এই জুলাইয়ে সেই ঐক্য আবার সুসংহত হোক। জনগণকে গণতান্ত্রিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা, রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার দাবি জানানো এবং রক্তের বিনিময়ে পাওয়া সংস্কারের সুযোগ যেন হারিয়ে না যায়— এই লক্ষ্যেই আমাদের আয়োজন।
তার ভাষ্য, সামনে পথ অনেক কঠিন হলেও সম্ভাবনা বিশাল। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, জনগণ যখন জেগে ওঠে, তখন কোনো শক্তিই তাদের রুখে দিতে পারে না। আসুন, এই জুলাই মাসকে পরিণত করি গণজাগরণের মাসে; ঐক্যের মাসে।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, এই অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে জুলাই-আগস্ট মাসজুড়ে গত বছরের প্রতিটি দিনের স্মৃতি পুনরুজ্জীবিত করা হবে। যে লক্ষ্যে ছাত্র-জনতা, রিকশাচালক, শ্রমিকরা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন— সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা নতুন করে শপথ নেব। এটা আমরা প্রতি বছর করব, যাতে স্বৈরাচার আবার কোনোভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। জুলাই-আগস্টের পুনরুত্থান কর্মসূচি সফল হোক, আমাদের স্বপ্ন নতুন করে জেগে উঠুক, আমাদের ঐক্য সর্বমুখী ও অটুট হোক— এই হোক আমাদের এই অনুষ্ঠানমালার লক্ষ্য।
এসএন /সীমা
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: