ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৭ হাজার ৩ শত ৫৭ জনে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পে তুরস্কে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ৬শ ৪৩ জন। আর যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়ায় ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত প্রাণহানির সংখ্যা ৫ হাজার ৭ শ ১৪ জন।
এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। তবে সময় গড়ানোয় তাদের বেঁচে থাকার আশা কমছে। আধুনিক তুরস্কের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে প্রাণঘাতি ভূমিকম্প হিসেবে পরিণত হয়েছে জানিয়েছে দেশটির দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়।
রয়টার্স বলছে, এখন পর্যন্ত ৩৭ হাজার ৩৫৭ জনের প্রাণহানির মধ্য দিয়ে এই ভূমিকম্প চলতি শতাব্দীর ষষ্ঠ প্রাণঘাতী প্রাকৃতিক দুর্যোগে পরিণত হয়েছে। এর আগে আছে ২০০৫ সালে পাকিস্তানে ভূমিকম্পে ৭৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ভূমিকম্পের পর থেকে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর পাশাপাশি আহত প্রায় লাখের কাছে পৌঁছে গেছে। শুধু তুরস্কেই ছয় হাজারের ওপর ভবন ধসে পড়েছে। ভূমিকম্পের তাণ্ডব থেকে বেঁচে গিয়েও বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছে। তবে সময় যত পেরোচ্ছে, ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে বেশি মানুষকে জীবিত উদ্ধারের আশাও ততই ফিকে হয়ে আসছে।
সিরিয়ার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে ধ্বংসস্তূপের নিচে জীবিত আর কাউকে পাওয়ার আশা তারা করছে না জানিয়ে সেখানে উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি টেনেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হোয়াইট হেলমেটস। দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে চলা যুদ্ধের কারণে এই এলাকায় ত্রাণ সরবরাহের প্রচেষ্টা বিঘ্নিত হচ্ছে।
সিরিয়ার আলেপ্পো শহরে জাতিসংঘের ত্রাণ বিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিথ জানান, উদ্ধার অভিযান শেষ করা সময় চলে এসেছে। এখন আহতদের আশ্রয় ও খাবারের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
তবে এর মধ্যেই আশার খবর মিলছে। তুরস্কে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ১৩ বছরের এক কিশোরকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। সে হাতাই প্রদেশে একটি ধ্বংসস্তূপের নিচে টানা ১৮২ ঘণ্টা আটকে ছিল।
গত সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর কেন্দ্র ছিল সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের গাজিয়ান্তেপ শহরের কাছে। পরে আরও কয়েক দফায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিকম্পে তুরস্কের পাশাপাশি সিরিয়াতেও ব্যাপক ক্ষয়িক্ষতি হয়েছে।