35653

04/24/2025 ঘুমের আগে দারুচিনি মেশানো দুধ খেলে কী হয়?

ঘুমের আগে দারুচিনি মেশানো দুধ খেলে কী হয়?

লাইফস্টাইল ডেস্ক

২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১১:৩৬

ক্লান্তিকর দিনের পর আমরা সবাই এমন কিছুর জন্য আকুল হয়ে থাকি যা আমাদের আরাম দেয়। ঘুমানোর আগে এক গ্লাস গরম দুধ অনেকের জন্য একটি ক্লাসিক প্রতিকার। কিন্তু আপনি কি জানেন এক চিমটি দারুচিনি যোগ করলে তা আরও ভালো হয়? এই আরামদায়ক পানীয়টি কেবল আরাম করতে সাহায্য করে না বরং এর কিছু আশ্চর্যজনক স্বাস্থ্য উপকারিতাও রয়েছে।

কেন দারুচিনি?

দারুচিনি কেবল একটি মসলা নয় যা খাবারে সুগন্ধ এবং স্বাদ যোগ করে; এটি স্বাস্থ্যকর বৈশিষ্ট্যেও পরিপূর্ণ। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে প্রদাহ কমানো এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করা পর্যন্ত, সহজলভ্য মসলাটি শতাব্দী ধরে প্রচলিত চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। উষ্ণ দুধের পুষ্টিকর উপকারিতার সঙ্গে মিলিত হলে এটি একটি পুষ্টিকর পানীয় হয়ে ওঠে, যা কেবল ভালো ঘুমের চেয়েও বেশি কিছু প্রদান করে।

১. ভালো ঘুমে সহায়তা

আপনার যদি প্রায়ই ঘুমিয়ে পড়তে বা সারা রাত ঘুমিয়ে থাকতে সমস্যা হয়, তাহলে দারুচিনি দুধ আপনার নতুন পছন্দ হতে পারে। উষ্ণ দুধে ট্রিপটোফ্যান থাকে। এটি একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড, যা শরীরকে সেরোটোনিন এবং মেলাটোনিন তৈরি করতে দেয়। এগুলো হলো হরমোন যা শিথিলতা এবং ঘুমের কারণ হয়। দারুচিনি এই সমীকরণে একটি প্রশান্তিদায়ক উপাদান, যা মানসিক চাপের মাত্রা আরও কমাতে সাহায্য করে, ফলে ঘুম দ্রুত এবং ভালো হয়।

২. হজম উন্নত করে

দারুচিনিও কার্মিনেটিভ, যা গ্যাস, পেট ফাঁপা এবং বদহজম কমাতে সাহায্য করে। যদি ভারী বা দেরিতে খাবার খেয়ে থাকেন তবে ঘুমানোর সময় দারুচিনির দুধ পান করলে পাচনতন্ত্র প্রশমিত হবে। এটি বিপাককে সহায়তা করে এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্সও কমাতে পারে।

৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে

দারুচিনি এবং দুধ উভয়েরই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরির বৈশিষ্ট্য রয়েছে। দুধ প্রোটিন, ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়ামে পূর্ণ, দারুচিনিতে প্রদাহ-বিরোধী এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এগুলো একত্রিত করলে রাতারাতি শরীর মেরামত এবং পুনরুদ্ধার করা যায়। সেইসঙ্গে সাধারণ সর্দি এবং মৌসুমী ফ্লুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

৪. রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখে

দারুচিনির দুধ খাওয়ার আরেকটি সুবিধা হলো এটি রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি ইনসুলিনের প্রতি সংবেদনশীলতা বাড়ায় এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টে কার্বোহাইড্রেটের ভাঙ্গন কমায়, রক্তে শর্করার স্থিতিশীলতা বজায় রাখে। ২০২২ সালের একটি গবেষণা অনুসারে, দেখা গেছে যে দারুচিনির সঙ্গে সম্পূরক গ্রহণ গ্লুকোজ এবং লিপিড বিপাক বৃদ্ধি করে টাইপ ২ ডায়াবেটিস কমাতে পারে।

৫. প্রদাহ এবং জয়েন্টের ব্যথা কমায়

দারুচিনিতে পলিফেনলের মতো শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। যদি আপনার জয়েন্টের অনমনীয়তা, পেশীতে ব্যথা বা শরীরে ব্যথা হয়, তাহলে ঘুমানোর আগে দারুচিনির দুধ খেলে প্রদাহ প্রশমিত হয় এবং ভালো ঘুম হবে। যা শরীরকে প্রাকৃতিকভাবে সুস্থ করে তোলে।

৬. ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে

দারুচিনির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ পরিষ্কার করে, যার ফলে ত্বক পরিষ্কার হয়। যেহেতু ঘুম ত্বক মেরামতের জন্য একটি পূর্বশর্ত, তাই এই পানীয়টি আপনার ত্বকের বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ উভয় ক্ষেত্রেই কাজ করে।

৭. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে

যদিও এটি কোনো জাদুকরী ফ্যাট ঝরানোর ওষুধ নয়, তবে দারুচিনির এমন বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ওজন নিয়ন্ত্রণের যাত্রায় সহায়তা করতে পারে। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে তৃষ্ণা দমন করে এবং দুধের প্রোটিন দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরা অনুভব করায়। এতে বারবার এটাসেটা খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা কমে আসে। ফলে কমে বাড়তি ওজনের ভয়ও।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]