আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে বৈঠকটি রাশিয়ার বৈশ্বিক বিচ্ছিন্নতার অবসান ঘটিয়েছে। সেই সঙ্গে রুশ-মার্কিন সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের জন্য বৈঠকটি বেশ কার্যকর ছিল। ভারতীয় বিশ্লেষণ কেন্দ্র 'ইমাজিন্ডিয়া ইনস্টিটিউট'-এর সভাপতি রবিন্ডার সচদেব বার্তা সংস্থা তাসকে এমনটাই বলেছেন।
তার মতে, 'ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক, আমার মনে হয় এটি খুব ভালো শুরু ছিল। আমি মনে করি, এটি একটি কাজ করেছে, তা হলো- বিশ্ব সম্প্রদায় থেকে রাশিয়ার বিচ্ছিন্নতার অবসান ঘটিয়েছে। সুতরাং এটি একটি গভীর স্বাগত লক্ষণ যে, বিশ্ব বিভিন্ন শিবির এবং মেরুতে বিভক্ত হচ্ছে না। এটি রাশিয়ার বিচ্ছিন্নতার অবসান ঘটায়। রাশিয়া আবারও সম্প্রদায়ের টেবিলে ফিরে এসেছে।'
রবিন্ডার সচদেব উল্লেখ করেন, 'একটি ছিল রাশিয়া-আমেরিকা সম্পর্কের পুনর্নির্মাণ, পুনঃসূচনা। দ্বিতীয়টি বিষয়টি ছিল, ইউক্রেন সংঘাতের বিষয়। আমার মনে হয় প্রথম বিষয়ে, অর্থাৎ রাশিয়া-আমেরিকা সম্পর্কের পুনর্নির্মাণ, শীর্ষ সম্মেলনটি উভয়ের জন্যই খুবই কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। এটা স্পষ্ট যে, তাদের সম্পর্কের উন্নতি বা সারবস্তু যোগ করার ক্ষেত্রে কিছু অগ্রগতি হয়েছে, এমনকি ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেও।'
ইউক্রেনের সংঘাত সম্পর্কে বিশেষজ্ঞের মতে, 'আজই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হবে এবং পরে একটি শান্তি সূত্র কার্যকর করা হবে - এমন প্রত্যাশা করা অবাস্তব ছিল।'
তার মতে, 'প্রথমে একটি শান্তি সূত্র তৈরি করা হয় এবং যখন শান্তি সূত্রের ভবিষ্যৎ রোডম্যাপ সম্পর্কে একটি সমঝোতা হয়, তখন যুদ্ধবিরতি আসে। সুতরাং, আজ আমরা যা দেখেছি তা হলো- মনে হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মধ্যে একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হয়েছে।'
আলাস্কায় শীর্ষ বৈঠক
১৫ আগস্ট আলাস্কার একটি সামরিক ঘাঁটিতে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে। রাশিয়ান প্রতিনিধিদলের মধ্যে ছিলেন ক্রেমলিনের সহযোগী ইউরি উশাকভ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ; অন্যদিকে মার্কিন প্রতিনিধিদলের মধ্যে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ।
আলোচনার পর পুতিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ইউক্রেনীয় সংঘাতের নিষ্পত্তিই শীর্ষ সম্মেলনের মূল বিষয়। রুশ নেতা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন সূচনা এবং সহযোগিতায় ফিরে আসার আহ্বানও জানান। তিনি ট্রাম্পকে মস্কোতে আমন্ত্রণ জানান। তার পক্ষ থেকে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় অর্জিত অগ্রগতির কথাগুলো জানান। তবে উল্লেখ করেন, উভয় পক্ষই সব বিষয়ে একমত হয়নি, অর্থাৎ কিছু বিষয়ে দ্বিমত রয়ে গেছে।
পরে ফক্স নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প অ্যাঙ্কোরেজ বৈঠককে '১০ এর মধ্যে ১০' রেটিং দেন। অর্থাৎ বৈঠকটি অনেকটা সফল হয়েছে বলে ইঙ্গিত দেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, সেখানে অনেক অবস্থানে একমত হওয়া গেছে এবং পরবর্তী ঘটনাক্রম কিয়েভের ওপর নির্ভর করবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট অদূর ভবিষ্যতে ইউক্রেন নিয়ে একটি চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনার বিষয়ে আস্থা প্রকাশ করেন।