ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য আলোচনায় অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। আগস্টের দ্বিতীয়ার্ধে ওয়াশিংটন থেকে আলোচনায় অংশ নিতে আসার কথা ছিল মার্কিন প্রতিনিধিদলের, কিন্তু সেটি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে বলে ভারতীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ফেব্রুয়ারির যুক্তরাষ্ট্র সফরের পর শুরু হওয়া এ আলোচনাকে ঘিরে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে এমন সময়ে, যখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন—যা বিশ্বের যেকোনো দেশের জন্য সর্বোচ্চ। এরই মধ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়া থেকে তেল আমদানির কারণে বাকি ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকরের বিষয়টি ‘ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভরশীল’।
কৃষি খাতেই বড় জট
আলোচনার অচলাবস্থার মূল কারণ ভারতের দীর্ঘদিনের অবস্থান—প্রতিটি বাণিজ্য চুক্তিতে কৃষকদের স্বার্থ সুরক্ষা। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের কৃষিপণ্যের বাজারে প্রবেশাধিকার পেতে চায়। এই বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চললেও তাতে কোনো ফল মেলেনি।
১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে মোদি বলেন, কৃষক, জেলে ও গবাদিপশুপালকদের স্বার্থে ভারত কোনো আপস করবে না। এর আগে ৭ আগস্ট ট্রাম্পের ঘোষিত অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্কের পরও মোদি জানিয়েছিলেন, ‘প্রয়োজনে ব্যক্তিগতভাবে বড় মূল্য দিতে হলেও’ তিনি আপস করবেন না।
ভূরাজনৈতিক কারণ
কখন এ শুল্ক শিথিল হবে তা অনিশ্চিত। ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকেও ইউক্রেন যুদ্ধবিরতিতে অগ্রগতি হয়নি, যদিও আলাস্কায় অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর ট্রাম্প বলেন, ‘কিছু অগ্রগতি হয়েছে’।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট সতর্ক করেছেন, আলোচনায় অগ্রগতি না হলে রাশিয়ার সঙ্গে তেল বাণিজ্যের কারণে ভারতের ওপর ‘দ্বিতীয় দফা শুল্ক’ বাড়তে পারে। ব্লুমবার্গকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম পুতিন আরও গঠনমূলকভাবে আলোচনায় বসবেন। মনে হচ্ছে তিনি হয়তো আলোচনায় রাজি হচ্ছেন। তবে যদি পরিস্থিতি ভালো না হয়, ভারতের ওপর নিষেধাজ্ঞা বা শুল্ক বাড়তে পারে।’