নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় ‘দাবিকৃত চাঁদার টাকা’ না পেয়ে মো. সালাউদ্দিন ওরফে রিদন (৩২) নামের এক প্রবাসীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে তার বাঁ হাতের কবজি কেটে যায় এবং একটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়।
শনিবার (১৬ আগস্ট) বেলা পৌনে ১১টার দিকে চৌমুহনী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আলীপুরের কন্ট্রাক্টর পোলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় লোকজন সালাউদ্দিনকে উদ্ধার করে প্রথমে তাকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার অবস্থার অবনতি দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
হামলার শিকার মো. সালাউদ্দিন উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার আলীপুর এলাকার গনি বলিগো বাড়ির কামাল হোসেনের ছেলে।
আহত সালাউদ্দিনের স্বজনদের অভিযোগ, দাবি করা চাঁদা না পেয়ে একই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদকসেবীরা ওই হামলা চালিয়েছে। তারা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদককারবারী।
সালাউদ্দিনের মামা আবদুল কাদের অভিযোগ করে বলেন, সালাউদ্দিন দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকতেন। বছরখানেক আগে তিনি দেশে আসেন। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে তার নতুন করে কাতার যাওয়ার কথা ছিল। তার মা বর্তমানে কাতারে রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, গত তিন-চার মাসে সালাউদ্দিন তাদের গ্রামের নিজ বাড়ির কিছু পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করেন। ওই সম্পত্তি বিক্রি করায় স্থানীয় একদল সন্ত্রাসী ও মাদকসেবী তার কাছে চাঁদা দাবি করে আসছে। সালাউদ্দিন চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তার সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। একপর্যায়ে সালাউদ্দিন সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে বাঁচতে তার মায়ের পরামর্শে কন্ট্রাক্টর পোল এলাকায় বাসা ভাড়া নেন।
আবদুল কাদের অভিযোগ, বেলা পৌনে ১১টার দিকে সালাউদ্দিন বাসা থেকে মোটরসাইকেলযোগে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে কন্ট্রাক্টর পোলের জয়নাল আবেদিন স্কুল এলাকায় তার গতিরোধ করে সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এ সময় কুপিয়ে সালাউদ্দিনের বাঁ হাতের কবজি মারাত্মকভাবে জখম করে তারা। এতে তার কনিষ্ঠ আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তারা সালাউদ্দিনের সঙ্গে থাকা ৫ লাখ টাকা, মুঠোফোন ও মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠান। অভিযুক্ত রকি, সোহাগ, রাহাত, ফাহাদ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলেও অভিযোগ করেন হামলার শিকার রিদনের মামা আব্দুল কাদের।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে রকি, সোহাগ ও রাহাতের মুঠোফোনে কল দেওয়া হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। তাই এ বিষয়ে তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান বলেন, সালাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে আহত করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হামলার শিকার ব্যক্তিকে আমি দেখেছি। ধারালো অস্ত্রে গুরুতর জখম করা হয়েছে। একটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কিছু ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ কাজ করছে। পরিবারের অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।