আসন পুনর্বহালের দাবিতে চলমান টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতালে বাগেরহাটের পর্যটন খাতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ঐতিহাসিক ষাট গম্বুজ মসজিদ থেকে শুরু করে সুন্দরবনের করমজল পর্যটন কেন্দ্র সব জায়গায় পর্যটকদের উপস্থিতি আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্থানীয় দোকানি, ট্যুরিজম ব্যবসায়ী এবং দিনমজুররা।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শুরু হওয়া হরতালের প্রভাবে পর্যটন এলাকাগুলো প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে। ফলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা ও উদ্বেগ।
ষাট গম্বুজ মসজিদের সামনে দীর্ঘদিন ধরে দোকান চালিয়ে আসছেন আব্দুল হাকিম। তিনি বলেন, সাধারণত এই সময় অনেক ভ্রমণকারী আসেন। কিন্তু হরতাল শুরুর পর থেকে বিক্রি একেবারেই নেই। দোকান খোলা রাখলেও ক্রেতা নেই। সংসার চালানোই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা জানালেন আরেক দোকানি রহিমা বেগম। তিনি বলেন, আমরা যারা দিন আনি দিন খাই, তাদের জন্য হরতাল বড় ভোগান্তি। সকাল থেকে এখন পর্যন্ত এক কাপ চাও বিক্রি হয়নি।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের কাস্টডিয়ান মো. যায়েদ জানান, হরতালের কারণে দর্শনার্থীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে। প্রতিদিন যেখানে শত শত মানুষ আসতেন, এখন সেখানে হাতেগোনা কয়েকজন আসছেন। এতে রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়ছে।
সুন্দরবনের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, প্রতিদিন যেসব দর্শনার্থী দিনে এসে ঘুরে গিয়ে যেতেন, হরতালের কারণে তারা আর আসতে পারছেন না। ফলে করমজল এখন পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে।
এর আগে, গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন (ইসি) আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাট জেলার চারটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রাথমিক প্রস্তাব দেয়। বাগেরহাটবাসীর আপত্তি সত্ত্বেও ৪ সেপ্টেম্বর ইসি চূড়ান্ত গেজেটে তিনটি আসন বহাল রাখে।
নতুন গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট জেলার আসনগুলো হলো- বাগেরহাট-১ (বাগেরহাট সদর, চিতলমারী, মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট, রামপাল, মোংলা), বাগেরহাট-৩ (কচুয়া, মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা)
এছাড়াও বাগেরহাটে ১৯৬৯ সাল থেকে ৪টি আসনে নির্বাচন হয়ে আসছিল। তখনকার সীমানা ছিল- বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২(বাগেরহাট সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা)।
বহুদিন ধরে বাগেরহাট জেলায় এ চারটি আসনে নির্বাচন হয়ে আসছিল। আসন কমানোর সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির প্রতিবাদে এ হরতালের ডাক দেওয়া হয়।