দেরিতে বিয়ে করলে পাকিস্তানি নারীদের স্থূল হওয়ার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়- বিশেষ করে শহুরে নারীদের ক্ষেত্রে।
আগের গবেষণাগুলোতে দেখা গেছে, বিয়ের পর পুরুষ ও নারী উভয়ের ওজন বেড়ে যায়। অনেক দম্পতির ক্ষেত্রে সংসারকেন্দ্রিক জীবনযাপন সরাসরি স্থূলতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
একটি স্বনামধন্য চিকিৎসা সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণায় জানা গেছে, পাকিস্তান ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে (২০১২–১৩ ও ২০১৭–১৮) এর তথ্য ব্যবহার করে। এতে দেখা গেছে, পাকিস্তানের অর্ধেকের বেশি প্রাপ্তবয়স্ক নারী অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতায় ভুগছেন। তবে শহরে বসবাসরত নারীদের ক্ষেত্রে বিয়ে দেরিতে করলে এই ঝুঁকি কমে যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কম বয়সে বিয়ে করলে স্থূলতার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বিয়ের পরই সন্তান জন্মদানের চাপ, সীমিত শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসচেতনতার অভাব এবং সংসারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা কম থাকার কারণে অনেক নারী দ্রুত অস্বাস্থ্যকর ওজন বৃদ্ধির শিকার হন।
গবেষণার ফলাফল
ইউনিভার্সিটি অব ইয়র্ক পরিচালিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে, সামাজিক লিঙ্গবৈষম্য এবং নগরজীবনের প্রভাব মিলিয়ে পাকিস্তানে স্থূলতার হার দ্রুত বাড়ছে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, বিয়ে দেরিতে করলে নারীরা শিক্ষা, সাক্ষরতা ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার বেশি সুযোগ পান। এর ফলে তারা সুস্থ জীবনধারা গড়ে তুলতে এবং পুষ্টির দিকে মনোযোগ দিতে সক্ষম হন।
বয়সের ব্যবধান ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ
গবেষণার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো- বিয়ে দেরিতে করলে দম্পতির বয়সের পার্থক্যও কমে আসে। এতে পরিবারে নারীদের প্রভাব বাড়ে, বিশেষ করে খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণে। এ ধরনের ক্ষমতায়ন শুধু নারীর ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যের জন্য নয়, সন্তানদের সুস্থতার ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
তবুও, গবেষণার তথ্যমতে পাকিস্তানে এখনো প্রায় ৪০ শতাংশ নারী ১৮ বছরের আগেই বিয়ে করছেন।
শহুরে নারীদের ক্ষেত্রে বিয়ে দেরি করার প্রতিটি বছর স্থূলতার ঝুঁকি গড়ে প্রায় ০.৭ শতাংশ কমায়। যারা ২৩ বছর বা তার পর বিয়ে করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সুরক্ষামূলক প্রভাব দেখা গেছে।