সরকারের সঙ্গে দ্বন্দ্বে যাবে না বিএনপি, ইশরাক ইস্যুতে নমনীয় হবে
প্রকাশিত:
১৮ জুন ২০২৫ ১২:১৭
আপডেট:
১৮ জুন ২০২৫ ১৬:৪৬

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর সরকারের সঙ্গে কোনো প্রকার দ্বন্দ্ব জাড়াতে চায় না দলটি। তারা মনে করেন, বিগত কয়েক মাসে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছিল। লন্ডন বৈঠকের মধ্য দিয়ে সেই দূরত্ব কমে সমঝোতা সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের একটা বড় সুযোগ সৃষ্টা হয়েছে। এখন কোনো ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে দ্বন্দ্বে গেলে নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
গত সোমবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির নিয়মিত সভায় এই মুহূর্তে সরকারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসেবে দলের নেতা ইশরাক হোসেনের শপথ না পড়ানোকে কেন্দ্র করে চলমান আন্দোলন থেকে সরে আসার মতামত দিয়েছেন স্থায়ী কমিটির অধিকাংশ নেতা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটি দুইজন সদস্য জানান, মেয়র ইস্যুতে ইশরাক হোসেনের চলমান আন্দোলন ও নিজেকে নিজে মেয়র হিসেবে ঘোষণা দিয়ে সংস্থাটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠকে করা নিয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়। সেখানে বেশিরভাগ সদস্য এই আন্দোলন থেকে সরে আসার মতামত দিয়েছেন। তারা মনে করেন, এই আন্দোলন সরকারের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব তৈরি হবে। তবে, স্থায়ী কমিটির কোনো-কোনো সদস্য মনে করেন, আদালত ও নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশের পর ইশরাকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানো এখানে ষড়যন্ত্র রয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, ইশরাক ইস্যুতে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। পক্ষে-বিপক্ষে মতামত এসেছে। তবে, এ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। আপাতত মেয়র ইস্যুকে কেন্দ্র করে চলমান আন্দোলন নমনীয় হবে বিএনপি।
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে পর মঙ্গলবার (১৭ জুন) ইশরাক হোসেনের নগর ভবনে যাওয়া এবং বৈঠক করার ঘটনায় বিস্মিত হয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মঙ্গলবার বিকেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি ইশরাক হোসেন ইস্যুতে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এ নিয়ে সিদ্ধান্তের বিষয়ে কিছু জানাতে হলে দলের পক্ষে থেকে জানাবেন।
স্থায়ী কমিটির ওই বৈঠকে লন্ডনে ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে, এটা নিয়ে খুব বেশি আলোচনা এগোয়নি। বৈঠকে শুরুতে লন্ডন বৈঠক ফলপ্রসু হয়েছে উল্লেখ করে সভায় তারেক রহমানকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়। তবে, ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের ওয়ান-টু-ওয়ান বৈঠকে কি আলোচনা হয়েছে সভায় তা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, আমরা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে সুন্দর ও সৌহার্দপূর্ণভাবে বৈঠক শেষ করার জন্য আমরা অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাই। এরপর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বৈঠকে আলোচনা বিষয়ে আমাদের কিছু জানায়নি। আমরা বিষয়টি জানতে চাওয়া এখতিয়ার বহির্ভূত হওয়ায় কিছু জানতে চায়নি।
মঙ্গলবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, স্থায়ী কমিটির বৈঠকের আলোচনা বিষয়ে যা জানানোর দরকার তা দলের মহাসচিব সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দিয়ে জানাবেন। এ নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: